তবে বেশ কিছু জায়গায় গরুর মাংসের দাম কমতে শুরু করেছে। এমনকি রাজধানীতে ৫৯৫ টাকায়ও মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এই পরিস্থিতিতে গরুর মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণে তিন নির্দেশনা দিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন- ২০০৯ বিষয়ক সেমিনারে এসব নির্দেশনা দেন তিনি।
বৈঠক শেষে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ডিজি গরুর মাংসের দাম কমাতে কি কি করণীয় এবং কত দাম নির্ধারণ করা যায় সেটি ঠিক করতে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনকে দায়িত্ব দেন।
ডিজি বলেন, আমাদের দুইটি বড় সংগঠন বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন আগামী বুধবার নিজেরা বসবেন এবং গরুর মাংসের দাম কমাতে কি কি করণীয় এবং কত দাম নির্ধারণ করা যায় সেটি ঠিক করবেন। এরপর বৃহস্পতিবার ভোক্তা অধিদপ্তরের সেটি লিখিতভাবে দেবেন। সেই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে যতটুকু পারা যায় আমি আমার ক্ষমতা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো। যেটা পারবো না সেটি সরকারের সংশ্লিষ্ট জায়গায় পাঠাবো।
পাশাপাশি গরুর উৎপাদন খরচ ও মাংসে দাম কত হওয়া উচিত সেটি অনুসন্ধান করার জন্য বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে দায়িত্ব দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন পোল্ট্রি ফিড নিয়ে একটি গবেষণা করছে। গরুর মাংসের মূল্য কত হওয়া উচিত বা এর উৎপাদন খরচ কত সেটি নিয়েও একটি গবেষণা করা দরকার। সেটা করার জন্য ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে আমি অনুরোধ জানবো। আমাদের কাছে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য নেই। পাকিস্তান যদি সাড়ে ৪০০ টাকায় গরুর মাংস খাওয়াতে পারে, তাহলে আমাদের এখানে কোনোভাবেই সাড় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দাম হতে পারে না। যত যুক্তিই দেন। এজন্য গবেষণা হওয়া দরকার।
এছাড়া মাংস ক্রয়-বিক্রিতে পাকা রশিদ রাখতে এবং মাংসের মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখতে বিক্রেতাদের নির্দেশনা দেন।
মার্কেট মার্কেটের গতিতে চলবে জানিয়ে মহাপরিচাল বলেন, কেউ পাইকারি থেকে ৭০০ টাকায় গরুর মাংস কিনে ৭৫০ টাকায় বিক্রি করবেন। তবে সেজন্য পাকা রশিদ দেখাতে হবে। কারণ আমাদের অভিজ্ঞতা মাংসসহ সব ধরনের পণ্যে এই জায়গায় কারচুপি হয়। তাই বিক্রেতারা যেখান থেকে মাংস কিনেন সেখানকার পাকা রশিদ রাখতে হবে। পাকা রশিদ যদি না থাকে তাহলে তাহলে ধরে নেওয়া হবে এখানে অনিয়ম হচ্ছে। এজন্য আমাদের অভিযান অব্যহত থাকবে। পাশাপাশি দোকানে ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল টাঙিয়ে রাখতে হবে।
এর আগে গরুর মাংসের দাম কমাতে কি কি করণীয়, খলিলসহ কয়েকজন কিভাবে কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করছে সেই বিষয়ে খুচরা ও পাইকারি মাংস ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি।
এ সময় বেশ কয়েকবার হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। যার করণে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ধরে চলা সেমিনারটি কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শুধু নির্দেশনা দিয়ে শেষ করেন তিনি।