দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহার) আসন থেকে এবারও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার। এই আসন থেকে পরপর তিনবার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৮ সালে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়ে খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সাধন চন্দ্র মজুমদার তার হলফনামায় বরাবরই পেশা হিসাবে ব্যবসা ও কৃষি উল্লেখ করেন।
এবারের হলফনামায় আয়ের উৎস হিসাবে তিনি সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসাবে সম্মানি ভাতা, কৃষি খাত, ব্যাংকে স্থায়ী আমানতের সুদ, অংশীদারি কারবার (ঠিকাদারি), ব্যবসা ও অন্যান্য উৎস উল্লেখ করেছেন। এসব উৎস থেকে বর্তমানে তার বাৎসরিক আয় ৩ কোটি ৯৪ লাখ ২৩ হাজার ২৫৬ টাকা।
২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় উল্লেখ করেছিলেন ২ কোটি ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৬১৮ টাকা। মন্ত্রী হওয়ার পর ৫ বছরের ব্যবধানে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে প্রায় দুই গুণ।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী সাধন চন্দ্র মজুমদারের বার্ষিক আয় ছিল ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে ১৫ বছরের ব্যবধানে তার বার্ষিক আয় বেড়েছে ১৫৭ গুণের বেশি। মন্ত্রী হওয়ার পর পাঁচ বছরে সাধন চন্দ্র মজুমদারের সম্পদ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী ওই সময় তার মোট স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য ছিল ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৯ হাজার ৬৩৯ টাকা। এবার দাখিল করা হলফনামায় মোট সম্পদ মূল্য উল্লেখ করেছেন ৯ কোটি ৫ লাখ ১২ হাজার ৬৯ টাকা।
আর ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী ওই সময় তার মোট স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য ছিল ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা। এই হিসাবে ১৫ বছরের ব্যবধানে সাধন চন্দ্র মজুমদারের সম্পদ বেড়েছে ৮৬ গুণের বেশি।
সম্পদ বৃদ্ধির কারণ হিসাবে এবারের হলফনামায় আয়ের উৎস হিসাবে খাদ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সংসদ-সদস্য ও মন্ত্রী হিসাবে সম্মানি ভাতা পেয়েছেন ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কৃষি খাত থেকে পেয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে পেয়েছেন ৫ লাখ ৩৪ হাজার ২৭৩ টাকা। শেয়ার-সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানতের সুদ ও অংশীদারি কারবার (ঠিকাদারি) থেকে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য উৎস থেকে আয় হয়েছে ১৪ লাখ ৭১ হাজার ৯৮৩ টাকা। এই মিলে তার বার্ষিক মোট আয় হয়েছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ ২৩ হাজার ২৫৬ টাকা।
২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় দাখিল করা হলফনামায় কৃষি খাত থেকে ২৫ হাজার টাকা ও ব্যবসা থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা বাৎসরিক আয় হতো সাধন মজুমদারের। এবার সাধন তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে হলফনামা দাখিলের সময় নগদ ছিল ৫ কোটি ৮৮ লাখ ৯৫ হাজার ৭১৩ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা টাকা ১২ লাখ ২৮ হাজার ৩৬৫ টাকা। সঞ্চয়পত্র, স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ২ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৯ টাকা। হলফনামায় নিজের দুটি গাড়ির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এগুলোর আর্থিক মূল্য তিনি উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া প্রায় ৬ লাখ টাকা মূল্যমানের আসবাবপত্র ও স্বর্ণালংকার রয়েছে তার।
২০০৮ সালের নির্বাচনে হলফনামা দাখিলের সময় অস্থাবর সম্পদ হিসাবে নগদ ছিল ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ২০ হাজার টাকা। ৯০ হাজার টাকা মূল্যমানের স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রও ছিল।
২০২৩ সালে নির্বাচনী হলফনামায় তার কন্যার নামে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকার জমি ক্রয় দেখালেও কোনো কন্যার নাম উল্লেখ করেননি খাদ্যমন্ত্রী।
বর্তমান খাদ্যমন্ত্রীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৫০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের কৃষিজমি এবং ৪৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩২ টাকা দামের অকৃষি জমি। ২০০৮ সালে নির্বাচনের সময় ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের কৃষিজমি এবং বসতবাড়িসহ ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমি ছিল তার।