বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। এতে দেখা যায়, গত জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণপত্র খোলা কমেছে ১৪ শতাংশ। তবে ঋণপত্র নিষ্পত্তির হার কমেছে ২৭ শতাংশ।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, রবি মৌসুমের কারণে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো কৃষিতে ব্যবহারের জন্য রাসায়নিক সার আমদানির ঋণপত্র খুলেছে।
এ কারণে এলসি খোলা বেড়েছিল। কিন্তু নভেম্বরে আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দাম বেড়ে ১২০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ায় অনেকেই প্রয়োজনীয় এলসি খোলা থেকে বিরত থাকে। কারণ, তিন মাস পর যখন তারা আমদানি দায় শোধ করবে, তখন ডলারের দাম কত হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
এদিকে ডলারের ওপর তাৎক্ষণিক চাপ কমাতে শিল্পের কাঁচামাল, ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির মাধ্যমে আমদানি, কৃষি উপকরণ ও রাসায়নিক সার আমদানির দায় পরিশোধের মেয়াদ ১৮০ দিন থেকে বাড়িয়ে ৩৬০ দিন করা হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ঋণপত্র খোলা হয়েছিল ৪৯৬ কোটি ডলারের, যা আগস্টে বেড়ে দাঁড়ায় ৫৫৯ কোটি ডলার। এরপর সেপ্টেম্বরে ঋণপত্র খোলা হয় ৫২৩ কোটি ডলারের, যা অক্টোবরে বেড়ে ৫৪২ কোটি ডলার উঠলেও নভেম্বরে এক লাফে ৫০৮ কোটি ডলারে নেমে আসে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-নভেম্বর সময়ে ভোগ্যপণ্যের জন্য এলসি খোলা হয় ১৯৫ কোটি ডলারের, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৯ শতাংশ কম। একই সময়ে ভোগ্যপণ্যে ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমে ২৪ শতাংশের বেশি। গত জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয় ৭৩ কোটি ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২১ শতাংশ কম। এই সময়ে মূলধনি যন্ত্রপাতিতে ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমে প্রায় ৪১ শতাংশ।
আলোচ্য পাঁচ মাসে শিল্পের মধ্যবর্তী পণ্যের জন্য এলসি খোলা হয় ১৫২ কোটি ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ কম। একই সময়ে মধ্যবর্তী পণ্যের ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমে প্রায় ১২ শতাংশ। আলোচ্য পাঁচ মাসে জ্বালানি পণ্যে ঋণপত্র খোলা কমেছে ৯ শতাংশ ও ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমেছে সাড়ে ১৪ শতাংশ। এ ছাড়া শিল্পের কাঁচামালের এলসি খোলা কমেছে ১৬ শতাংশ, আর নিষ্পত্তি প্রায় ৩৬ শতাংশ কমেছে।
ডলারের দামে ঊর্ধ্বমুখী ধারা চললেও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকগুলো এটির দাম কমিয়ে আনছে। নতুন করে আগামী রোববার থেকে ডলার কেনার দাম ঠিক করা হয়েছে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা ও বিক্রির ক্ষেত্রে যা ১১০ টাকা। এ নিয়ে এক মাসের কম সময়ে তিন দফায় ডলারের দর সব মিলিয়ে কমল এক টাকা।
এমআই