উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরীর সমর্থক এবং তাঁর বিরোধীদের পাল্টাপাল্টি দুটি মানববন্ধন কর্মসূচি একই সময় উপজেলা চত্বর এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় ডাকা হয়। প্রশাসন শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে স্বতন্ত্র সাংসদ নিক্সন চৌধুরী নির্বাচিত হন। ওই দুবার এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক সাংসদ ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। কাজী জাফরউল্লাহকে হারিয়ে নিক্সন চৌধুরী সাংসদ হলে এই তিন উপজেলায় আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে পড়ে।
গত ১০ অক্টোবর চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাউছার হোসেন জাফরউল্লাহর প্রতি আনুগত্য ছেড়ে নিক্সন শিবিরে যোগ দেন নির্বাচনের ১৫ দিন আগে। ফলে নিক্সনের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে কাউসার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন এবং বিজয়ী হন। কিন্তু ওই নির্বাচন চলাকালে কাউসার সমর্থক কয়েকজন এজেন্ট ও কর্মী জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের বাধা দেন। এটাকে কেন্দ্র করে নিক্সন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন সুলতানাকে মুঠোফোনে আপত্তিকর কথা বলেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাত আটটার দিকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সাংসদ নিক্সন জেলা প্রশাসককে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার চরভদ্রাসন থানায় একটি মামলা হয়। মামলা দায়েরের পর তিন উপজেলার আওতাধীন দুই ভাগে বিভক্ত আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এ জাতীয় কর্মসূচি পালন করা হয় ভাঙ্গায়। সমর্থকেরা সাংসদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করেন। অপরদিকে নিক্সন বিরোধীরা জেলা প্রশাসক ও ইউএনওকে গালাগালি করার প্রতিবাদে তাঁর বিচার দাবি করে কর্মসূচি পালন করেন।