এর আগে আজ বুধবার (২৮ বুধবার) সকালে আদালতে হাজির করা হয় ইরফান ও জাহিদকে। সেখানে কারাগারের গারদে রাখা হয় তাঁদেরকে। পরে বেলা ১২টার দিকে তাঁদেরকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হয়।
এদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সাজা হওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ইরফান সেলিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে তাঁকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়।
গত রবিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর রাজধানীর কলাবাগান ট্রাফিক সিগন্যালের অদূরে একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় একটি জিপ গাড়ি। এর পর 'সংসদ সদস্য স্টিকার' লাগানো গাড়িটি থেকে নেমে আরোহীরা মোটরসাইকেল আরোহী নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। ওই ঘটনায় গাড়ির আরোহী ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) হাজি মো. সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ ইরফান সেলিম, গাড়িচালক মিজানুর রহমান ও দেহরক্ষী জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইরফান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
পরেরদিন সোমবার (২৬ অক্টোবর) পুরান ঢাকার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইরফানকে মদ্যপানের জন্য এক বছর এবং অবৈধভাবে ওয়াকিটকি রাখার দায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। দেহরক্ষী জাহিদকে ওয়াকিটকি রাখার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডের পর তাঁদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, ইরফান ও তাঁর সহযোগীরা গাড়ি থেকে নেমে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খানকে মারধর করার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ রেঞ্জ রোভার ব্র্যান্ডের গাড়িটি জব্দ করে চালক মিজানুর রহমানকে আটক করলে রাতভর চলে সমঝোতার চেষ্টা। রাতে সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পর গতকাল সকালে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ বাদী হয়ে ইরফান সেলিমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। গত সোমবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত টানা ১০ ঘন্টা পুরান ঢাকায় হাজি সেলিমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে অবৈধ অস্ত্র, মদ, ইয়াবা, বিয়ার, ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ইরফান ও জাহিদকে গ্রেপ্তারের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দেন। ওই দিন রাতে বাড়ির পাশে আরেকটি ভবনে অভিযান চালিয়ে ইরফান সেলিমের একটি টর্চার সেলের সন্ধান পান র্যাব কর্মকর্তারা। সেখান থেকে হাড়, ওয়াকিটকি, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, অস্ত্র, ইয়াবাসহ অন্য আলামত উদ্ধারের ঘটনায় ইরফানের বিরুদ্ধে অন্তত দুটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। সিসি ক্যামেরায় পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণ ও টর্চার সেল চালানোসহ ইরফানের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখছে র্যাব। এর পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে ইরফানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে চকবাজার থানায় দুটি মামলা করে র্যাব। তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ।