আজ বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পরিচালিত ‘বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন অর্থায়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রকল্পের আওতায় উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত করার সুযোগ না থাকায় অবমুক্তকরণের নামে ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর প্রায় ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের অপচয় করা হচ্ছে। সড়কবাতি-সংক্রান্ত দুটি প্রকল্পের প্রস্তাবনা অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক যথাযথভাবে যাচাই না করেই অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলনসহ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, একই সময়ে একই ধরনের সক্ষমতার প্রকল্প দুটি অনুমোদিত হলেও প্রকল্প দুটির আওতায় উত্থাপিত সড়কবাতির ইউনিটপ্রতি মূল্যের পার্থক্য প্রায় এক লাখ এক হাজার টাকা। এই দুটি প্রকল্পের মধ্যে যে প্রকল্পে সড়কবাতির ইউনিট মূল্য সবচেয়ে বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই প্রকল্পটির প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রণয়ন, অনুমোদন, বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদার নির্বাচনে এক মন্ত্রীর সাবেক সহকারী প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করেছেন। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক সড়কবাতি অকার্যকর হয়ে গেছে।
টিআইবির তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে প্রাক্কলিত প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা জোগানের পরিকল্পনার বিপরীতে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই অর্থের মাত্র ৬ শতাংশ (১২,৬৯৯.৭০ কোটি টাকা) তহবিল আন্তর্জাতিক উৎস থেকে প্রদান করা হয়েছে।
ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি ব্যবস্থাপক এম. জাকির হোসেন খান এসব তথ্য তুলে ধরেন। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
কৌশলগত কারণে প্রকল্পগুলোর নাম এবং এলাকার নাম উল্লেখ না করে শুধু প্রকল্পের সংখ্যা তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্প-১ বনায়নের জন্য বরাদ্দকৃত ৩.২৮ কোটি টাকার ৪০ শতাংশ বা তহবিলের ১ কোটি ৩১ লাখ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।
প্রকল্প-২ বাস্তবায়নে প্রায় ১ লাখ চারাগাছ কম লাগানোর অভিযোগসহ প্রকল্পের আওতায় ক্রয় করা যানবাহন ও অফিস সরঞ্জাম প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে আত্মসাৎ করা হয়েছে ৫৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
প্রকল্প-৩ বাস্তবায়নে নিম্নমানের চারা রোপণসহ প্রকল্পের উল্লিখিত কার্যক্রমের আংশিক বাস্তবায়ন ও ব্যয় দেখিয়ে বরাদ্দকৃত তহবিলের অংশ বিশেষ ১ কোটি ৮৪ লাখ ৪২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
প্রকল্প-৪ বাস্তবায়নে প্রকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ বাস্তবায়ন করে বাকি অর্ধেকের মতো তহবিল ৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অর্থসংবাদ/ এমএস