লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে রাজস্বে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ৬৫ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এসব তথ্য তুলে ধরেন।
এদিকে আয়কর মেলার পরিবর্তে নভেম্বরজুড়ে করদাতাদের আয়কর রিটার্ন গ্রহণ ও কর তথ্য সেবা দেবে দেশের ৩১টি কর অঞ্চল। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ওই সময়ের পর আর রিটার্ন দাখিলের জন্য সময় বাড়ানো হবে না বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষ বিবেচনায় সময় বাড়ানো হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেউ ৩০ তারিখের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে না পারলে আইনি উপায়ে পরবর্তী সময়ে জমা দিতে (জরিমানা দিয়ে) পারবেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, গত অক্টোবর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আহরণ ৬৬ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬৫ হাজার ৮০৮ কোটি। সে হিসেবে এবার রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ১৪ শতাংশ। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ৮৭ হাজার ১ কোটি টাকা। সে হিসেবে আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পিছিয়ে আছি। তবে করোনাজনিত পরিস্থিতিতে ইকোনমির যে অবস্থা, এর মধ্যে গত বছরের এ সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ১৪ শতাংশ এগিয়ে আছি, সেটা আশাব্যঞ্জক। আশা করছি, ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি আরো ভালো হবে।
এনবিআরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৩ হাজার ৭১৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। রাজস্ব আদায় হয় ৪৯ হাজার ৯৮৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা। মোট ঘাটতি ছিল ১৩ হাজার ৭২৪ কোটি ৬ লাখ টাকা।
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে ভ্যাট খাত থেকে। এ খাতে আদায় হয়েছে ১৮ হাজার ১১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর শতাংশ হিসাবে সাফল্য দেখিয়েছে আয়কর ও ভ্রমণ খাত। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮৫ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আয়কর খাতে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৭১০ কোটি ১১ লাখ টাকা, যেখানে আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ৯১৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
অন্যদিকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমদানি ও রফতানি পর্যায়ের শুল্ক খাতে ২১ হাজার ৮০৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ৯৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এ খাতে সবচেয়ে বেশি ৫ হাজার ৮৪৭ কোটি ৮২ লাখ টাকার রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে, যদিও সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে শুল্ক খাতে গত অর্থবছরের চেয়ে।