জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলেছে, ইথিওপিয়ার পূর্বাঞ্চল ও সোমালিয়ায় পঙ্গপালের বংশ বিস্তারের অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে। ফলে আগামী দিনগুলোয় এ দুটি দেশের কৃষি খাত পঙ্গপালের কারণে চরম ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে কেনিয়াও। লোহিত সাগরের উভয় পাশে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে পঙ্গপালের ঝাঁক। ফলে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ইরিত্রিয়া, সৌদি আরব ও ইয়েমেন। এরই মধ্যে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন।
জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশনের (এফএও) অধীনে পঙ্গপালের বিস্তার নিয়ে কাজ করছেন কেইথ ক্রিসাম। তিনি বলেন, কেনিয়ার জন্য পঙ্গপালের ঝুঁকি অনিবার্য হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় দেশটিতে পঙ্গপাল হানা দিতে পারে।
এক বছর আগে আফ্রিকা মহাদেশের ৩ লাখ ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটার বা ১ লাখ ৩৫ হাজার বর্গমাইল জমি পঙ্গপালের আক্রমণের শিকার হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরো পূর্ব আফ্রিকার কৃষি ব্যবস্থা। তবে পঙ্গপালের হানা লোহিত সাগরের আফ্রিকা উপকূলে সীমাবদ্ধ ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে পঙ্গপালের উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল। এর পর থেকে তা ধীরে ধীরে কমে আসে। এখন নতুন করে পুরো অঞ্চলজুড়ে পঙ্গপাল হানা দিয়েছে।
কেইথ ক্রিসাম আরো বলেন, এবার লোহিত সাগরের উভয় পাশে পঙ্গপালের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এতে সহজেই অনুমান করা যায়, এবার কেনিয়া থেকে ইয়েমেন অবধি পঙ্গপালের হানায় আরো বেশি পরিমাণ জমি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা যুদ্ধ ও করোনা মহামারীর ক্ষতি ছাপিয়ে এসব দেশকে নতুন চ্যালেঞ্জে ফেলবে।
সেপ্টেম্বর-নভেম্বরজুড়ে সোমালিয়ার মধ্যাঞ্চল ও ইথিওপিয়ার পূর্বাঞ্চলে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এতে পুরো অঞ্চলজুড়ে পঙ্গপালের বংশ বিস্তারের জন্য অনুকূল আবহাওয়া পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেইথ ক্রিসাম বলেন, এত বড় অঞ্চলজুড়ে অনুকূল আবহাওয়া পাওয়ায় পঙ্গপাল ঝাঁকে ঝাঁকে বংশ বিস্তার করেছে। এমনিতেই কৃষি খাতের জন্য ক্ষতিকারক এ পতঙ্গের বংশবৃদ্ধির হার তুলনামূলক বেশি।
এফএও জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে হর্ন অব আফ্রিকা ও লোহিত সাগরের উভয় পাশের দেশগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়ে যায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে চলছে ভয়াবহ খাদ্য সংকট। এ পরিস্থিতিতে নতুন করে পঙ্গপালের আক্রমণ দেখা দিলে এ অঞ্চলের দেশগুলোয় সম্মিলিতভাবে ২৭ লাখ টন শস্য নষ্ট হতে পারে। আর্থিক লোকসানের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৮০ কোটি ডলারে। দেখা দিতে পারে চরম খাদ্য সংকট। বাড়তে পারে দারিদ্র্য। তাই পঙ্গপালের বিস্তার ঠেকাতে এখন থেকে কার্যকর ও সতর্ক অবস্থান নেয়া এবং নজরদারি বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।