ভারতের সুপ্রিম কোর্ট টেলিকম সংস্থাগুলিকে মাসখানেক সময় দিলেও কেন্দ্রের নির্দেশ, আজ অর্থাৎ, শুক্রবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যেই মেটাতে হবে বকেয়া ১ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। যে নির্দেশে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে ভোডাফোন আইডিয়া। কারণ, বিপুল পরিমাণ লোকসানের বোঝায় জর্জরিত ভোডাফোন আইডিয়াকে মেটাতে হবে সবচেয়ে বেশি ৪৪ কোটি টাকা। গোটা ঘটনায় জেরে শেয়ার বাজারেও পড়তির দিকে ভোডাফোন আইডিয়ার দর। এ দিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর দুপুর আড়াইটে নাগাদ ভোডাফোনের শেয়ারদর পড়ে যায় ১৬.৬৭ শতাংশ।
শুক্রবার ভারতী এয়ারটেল, ভোডাফোন আইডিয়া, টাটা টেলিসার্ভিসেস-সহ দেশের বিভিন্ন টেলিকম সংস্থাগুলিকে অ্যাডজাস্টেড গ্রস রেফিনিউ (এজিআর) হিসাবে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা বকেয়া মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্যে রয়েছে লাইসেন্স ফি বাবদ ৯২ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা এবং স্পেকট্রাম ফি বাবদ ৫৫ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, আগামী ১৭ মার্চ, পরর্বতী শুনানির আগেই টেলিকম দফতরের কাছে সেই বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে বিভিন্ন টেলি সংস্থাকে। এবং এই নির্দেশ বলবৎ না করতে পারলে ওই সংস্থাগুলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর-সহ শীর্ষ কর্তাদের পরবর্তী শুনানির সময় আদালতে হাজিরা দিতে হবে।
যা শুনে চিন্তার ভাঁজ ভোডাফোন আইডিয়ার শীর্ষ কর্তাদের কপালে। গত ডিসেম্বরে সংস্থার চেয়ারম্যান কুমার মঙ্গলম বিড়লা সংবাদ মাধ্য্যমকে জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়া এই বিপুল পরিমাণ বকেয়া মেটানো তাঁর সংস্থার পক্ষে সম্ভব নয়। এমনকি, সে ক্ষেত্রে সংস্থা বন্ধ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফল ঘোষণা করে সংস্থার এমডি তথা সিইও রবীন্দ্র টক্কর জানিয়েছেন, ভোডাফোন আইডিয়ার ক্ষতির অঙ্ক ৬ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা। ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষে যা ছিল ৫ হাজার ৫ কোটি টাকা। এই আবহে কী ভাবে এই বিপুল পরিমাণ বকেয়া মেটাবে ভোডাফোন আইডিয়া, তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘কিম ইং সিকিউরিটিজ’-এর বিশ্লেষক নীরব দালালের সাফ কথা, “ভোডাফোনের কোনও আশাই নেই।” তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে কিছুটা ছাড় দিলে তা-ও বা আশা ছিল। তবে এই মুহূর্তে বকেয়া মেটানোর মতো অবস্থায় নেই ভোডাফোন।”