বিজিবি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভারতে আসাম রাজ্যের গুয়াহাটিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাফিনুল ইসলাম এই আস্তানাগুলো ধ্বংস করার জন্যও ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিএসএফ-এর মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা এ প্রসঙ্গে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের 'জিরো টলারেন্স নীতি'র কথা উল্লেখ করেছেন এবং যদি ওইসব আস্তানা থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
তবে বিএসএফের কর্মকর্তারা বলছেন এর আগেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসীদের আস্তানা সম্পর্কে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
বিএসএফ-এর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে ভারতের বিদ্রোহী গোষ্ঠী এনএলএফটির রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে ঘাঁটি সম্পর্কে তথ্য এই সম্মেলনে তারা বিজিবিকে দিয়েছেন।
ডিসেম্বরের ২২ থেকে চারদিন-ব্যাপী এই সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১১জন সদস্যের একটি দল অংশ নেয়। আর ভারতের পক্ষে বিএসএফের মহাপরিচালক ১২ সদস্যের একট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকে বিজিবি এবং বিএসএফ-এর মধ্যে সীমান্তে হত্যার ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক সীমান্তে 'বিএসএফ/ভারতীয় নাগরিক/দুর্বৃত্ত কর্তৃক বাংলাদেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা/আহত/মারধরের' ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিজিবি জানাচ্ছে, সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে আরও কার্যকরী উদ্যোগ হিসেবে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোয় রাত্রিকালীন যৌথ টহল পরিচালনার ব্যাপারে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে সমন্বিত টহল বাড়ানোর ব্যাপারে বিজিবি ও বিএসএফ একমত হয়েছে বলে বিজিবি জানাচ্ছে।
বিজিবি মহাপরিচালক মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে এবং অপরাধীদেরকে হত্যার পরিবর্তে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।
এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, সীমান্তে হত্যার ঘটনা অদূর ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে বিএসএফ মহাপরিচালক বিজিবিকে আশ্বাস দিয়েছেন।সীমান্তে মানবাধিকার রক্ষা ও সহিংসতা বন্ধে যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে দুই পক্ষই সীমান্তে জনসচেতনতা কর্মসূচি জোরদার করা, দুর্গম অঞ্চলে যথাযথ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা-সহ সমন্বিত টহল বাড়ানোর ব্যাপারে একমত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ বন্ধের জন্য দুই বাহিনী পরস্পরের মধ্যে 'তাৎক্ষণিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রয়োজনে যৌথ অভিযান পরিচালনা'র ব্যাপারে একমত হয়েছে।মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবার পাচার, আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান, গবাদিপশু, জালমুদ্রা, স্বর্ণ প্রভৃতি চোরাচালানের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজিবি মহাপরিচালক সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার অংশ হিসাবে এসব বিষয়ে বিএসএফ-এর সহযোগিতা চেয়েছেন বলে বলা হয়েছে। সূত্র-বিবিসি বাংলা