আজ শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। কর্মসূচিতে শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এসময় মানববন্ধনে তারা দুইটি দাবি পেশ করেন। তাদের দাবিগুলো হলো: পূর্বের ন্যায় আলাদাভাবে বিভাগ পরিবর্তন তারা পূর্বের ন্যায় বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানের মাধ্যমে আলাদা ইউনিটে পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানান। এসময় এভাবে ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগ পরিবর্তনের সুযোগ চান তারা। এছাড়া গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নটরডেম কলেজ , ঢাকা কলেজ , নরসিংদী সরকারী কলেজ , সরকারী বিজ্ঞান কলেজের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।
এসময় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী রাসেল বলেন, স্বায়ত্তশাসিত ৪৮ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে আমরা দেখেছি ইউজিসি একটি চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমাদের ব্যাপারে। আমরা যারা বিভাগ পরিবর্তনের জন্য অনেক আগে থেকে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান পড়ে এসেছি তারা আমাদের জন্য এই বিভাগ পরিবর্তন ইউনিটটি রাখে নাই। যা আমাদের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, দেড় বছর ধরে যে শিক্ষার্থী বাংলা ইংরেজি সাধারণ জ্ঞান পড়েছে। তাদের দ্বারা কি সম্ভব তাদের ইউনিটের পরীক্ষা দেওয়া। যদি আমরা দেড় বছর ধরে সাইন্স বা কমার্সের বিষয়ে পড়তাম তাহলে আত্মবিশ্বাস করে বলতে পারতাম যে আমরা চান্স পাবো। আপনারা যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ইন্টার পরীক্ষা হবে না। তখনওতো বলতে পারতেন এবার ভর্তি পরীক্ষায় ডি ইউনিট থাকবে না। কিন্তু এখন কেন বলছেন, যখন আমরা অনেকদুর চলে এসেছি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তারাও ডি ইউনিট রাখছে না কিন্তু তারা সেটা এক বছর আগে বলে দিয়েছে। আপনারা সেটা বলতে পারতেন।
তিনি আরও বলেন,আমরা মনে করি এটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। শিক্ষা পদ্ধতির এই অনিয়মের প্রতি আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমাদের দাবি মানতেই হবে। আগের মতো করে ডি ইউনিট রাখতে হবে। আপনারা যতদিন আমাদের দাবি না মানবেন, আমরা আন্দোলন করে যাবো। আমরা আমাদের দাবি আদায় করে তারপর রাজপথ ছাড়বো।
হাজেরা আলম রুহানা বলেন, এসএসসি পরীক্ষা যখন হবে না সিদ্ধান্ত হয় তখনই আমরা আমাদের মতো করে ডি ইউনিটের প্রস্তুতি নিতে থাকি। কিন্তু যখন শুনলাম ডি ইউনিট থাকছে না যার কারণে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমাদের প্রস্তুতি অনেকদূর চলে এসেছিল। কিন্তু হুট করে এমন সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের সাথে যারা সেকেন্ড টাইমার রয়েছেন, অথবা যারা অনেকদিন ধরে সেকেন্ড টাইম এর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা আসলে কিসের পরীক্ষা দেবেন। তারা তো তাদের ইউনিটে অনেকদিন ধরে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে।
এবার মহামারীর কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি তোড়জোর চালালেও বড় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরইমধ্যে গত ১ ডিসেম্বর ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসে।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের কমিটি গত শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রথম সভা করে। ওই সভায় গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে একযোগে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান- তিনটি গুচ্ছে ১০০ নম্বরের সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা: সেগুলো হলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্বদ্যিালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়।