বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয় থেকে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক তৃতীয় বৈশ্বিক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে সড়ক নিরাপত্তা প্রদান’ শীর্ষক বিশ্বব্যাংকের নতুন এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে পদ্ধতিগত, লক্ষ্য কেন্দ্রিক ও টেকসই সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পে অব্যাহত বিনিয়োগের অভাবে বাংলাদেশে সড়কে মৃত্যুর উচ্চহারের প্রতি ইঙ্গিত করে এই অবস্থার পরিবর্তনে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগ অগ্রাধিকারগুলো চিহ্নিত করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মাথাপিছু বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর হার উচ্চ-আয়ের দেশগুলোর তুলনায় দ্বিগুণ এবং এ ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে ভালো করা দেশগুলোর তুলনায় পাঁচগুণ। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় শিশু ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী। ২০১৭ সালে শিশুদের মৃত্যুর শীর্ষস্থানীয় কারণগুলোর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা ছিল চতুর্থ, যেখানে ১৯৯০ সালে ছিল নবম।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফার বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্রুতগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কল্যাণে এই অঞ্চলে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে সড়কে প্রাণহানির সংখ্যাও বেড়েছে।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সড়ক নিরাপত্তায় যে সংকট, তা অগ্রহণযোগ্য। কারণ, এটা প্রতিরোধযোগ্য। ভালো খবর হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো তাদের জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া, জীবন বাঁচানো ও বৃহত্তর সমৃদ্ধির পথে যাত্রা টেকসই করার জন্য জরুরি প্রয়োজনটি বুঝতে পেরেছে। বিশ্বব্যাংক তাদের এই প্রচেষ্টায় সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের সমন্বয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় উপ-অঞ্চলে সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বিস্তৃত গবেষণার অংশ হচ্ছে এই প্রতিবেদন, যেখানে সড়ক ও যানবাহনকে আরও নিরাপদ করতে আঞ্চলিক পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
পূর্বাঞ্চলীয় এই উপ-অঞ্চলে দক্ষিণ এশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮৬ শতাংশের বসবাস। এছাড়া এ অঞ্চলের ৯২ শতাংশ যানবাহনের অবস্থান এখানে এবং সড়ক দুর্ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ায় মোট প্রাণহানির ৮৭ শতাংশ এ অঞ্চলেই ঘটে।