সাধারণত বছরের প্রথম অধিবেশন দীর্ঘ হয়। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর সংসদ সদস্যরা অধিবেশন জুড়ে ওই ভাষণের ওপর আনার ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন। বছরের শুরুর অধিবেশন ৩০ কার্যদিবস চলারও রেকর্ড আছে।
সোমবার বিকাল সাড়ে চারটায় অধিবেশন শুরু হয়ে প্রথমে সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন এবং শোক প্রস্তাব উত্থাপনের পর রাষ্ট্রপতি সংসদে ভাষণ দেবেন। এরপর অধিবেশন মুলতবি করা হবে।
রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সংসদের উত্তর প্লাজা দিয়ে আইন সভা ভবনে প্রবেশ করবেন, যা প্রেসিডেন্ট’স প্লাজা নামেও পরিচিত।
৬৫ হাজার বর্গফুটের এই জায়গা মূলত রাষ্ট্রপতির প্রবেশের জন্য তৈরি করা। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি এখান দিয়ে সংসদে ঢোকেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর আগে প্রায় ৫ বছর পর এই প্লাজা দিয়ে কোনো রাষ্ট্রপ্রধান ঢোকেননি। আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে বছরের প্রথম অধিবেশনে এই প্লাজা দিয়েই সংসদে ঢুকেছেন।
সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিবছর ফুল দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। তবে এবার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার জন্য তা করা হবে না।
সংসদ ভবনে প্রবেশ করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বিশেষ লিফটে চড়ে সাত তলায় তার চেম্বারে যাবেন। সেখান থেকে অধিবেশন কক্ষে যাবেন। স্পিকার তাকে আমন্ত্রণ জানালে বিউগলে ফ্যানফেয়ার বাজবে। রাষ্ট্রপতি সংসদে ঢুকলে নিয়মানুযায়ী জাতীয় সংগীত বাজানো হবে।
স্পিকারের পাশের চেয়ারে বসবেন রাষ্ট্রপতি। তাকে ভাষণ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানোর পর ডায়াসে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেবেন রাষ্ট্রপ্রধান। মন্ত্রিপরিষদ থেকে ঠিক করে দেওয়া ভাষণের সংক্ষিপ্তসার সংসদে পাঠ করবেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের দিন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অধিবেশন দেখার আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে এবার তা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন হুইপ ইকবালুর রহিম।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মহামারীকালের অন্য চারটি অধিবেশনের মত এবারও সীমিত সংখ্যক সংসদ সদস্য অংশ নেবেন। প্রথম দিন করোনাভাইরাস পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া সংসদ সদস্যরা অংশ নেবেন। এরপর প্রতি কার্যদিবসে সর্বোচ্চ ৯০ জনকে পর্যায়ক্রমে আমন্ত্রণ জানানো হবে।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মরতদেরও অধিবেশন চলার সময় সংসদ ভবনে প্রবেশ সীমিত থাকবে। একমাত্র দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা সংসদে ঢুকতে পারবেন। তবে তাদের করোনাভাইরাস নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। সংসদ অধিবেশনের সংবাদ সংগ্রহ করতে সাংবাদিকরা একদিন সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে পারবেন।
শুধুমাত্র প্রথম দিন রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় সংসদ ভবনে যাওয়ার অনুমতি পাবেন সাংবাদিকরা। এজন্য প্রত্যেক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান থেকে একজন প্রতিবেদককে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনায় করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানো হয়েছে।
এরপর সংসদ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার থেকে সংবাদ সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ছাড়াও অধিবেশনে কয়েকটি বিল উত্থাপন ও পাসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।