তাদের অভিযোগ, আন্দোলন করার কারণেই এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের। ফলে ২৪ মাস পর ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে শুরু হওয়া পরীক্ষা প্রথম দিনেই বর্জনের মুখে স্থগিত হয়ে গেছে।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) বেলা সোয়া দশটার দিকে পরীক্ষার হলে প্রবেশ না করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে অবস্থান নেয় ইন্সটিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীরা। এসময় সবাইকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়ার দাবি জানায় তারা। পরে প্রক্টরের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
বন্ধুকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আল আমিন সিফাত জানান, ‘এই পরীক্ষাটা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের ক্লাস ওই বছরের জুনে শুরু হওয়ায় ১২ মাসের কোর্স মাত্র ছয় মাসেই শেষ করতে হয়েছিল। তবে প্রথম দফা পিছিয়ে ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি পরীক্ষার সম্ভাব্য দিন নির্ধারণ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় পেছানোর পর ওই বছরের ২৫ মার্চ থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার ব্যাপারে রুটিনও প্রকাশিত হয়। কিন্তু এর আগেই করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। পরে তাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ১০ জানুয়ারি রুটিন প্রকাশ করে বলা হয়, ২০ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘এর আগের ব্যাচগুলোতে অনেকের ক্লাসে উপস্থিতির হার শূন্য থাকলেও পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এবার পরীক্ষার জন্য আন্দোলন করেছি বলেই ১১ জনকে আটকে দেওয়া হয়েছে।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরিয়া প্রিয়া বলেন, ‘আমি চিকিৎসার জন্য দুই মাস ভারতে ছিলাম। আমার অপারেশন হয়েছিল। ২০১৯ সালেই এসবের ডকুমেন্ট জমা দিয়েছিলাম অফিসে। কিন্তু এবার ১২ জানুয়ারি আমাদের ফর্ম ফিলআপের দিন আমাদেরকে জানানো হলো যে আমাদের পরীক্ষা দিতে দেবে না। পরে ১৫-১৬ তারিখ আমরা অফিসে যাই। ১৭ তারিখ আমাদের চারজনকে সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। আমরা ভেবেছিলাম একে একে সবাইকেই সুযোগ দেওয়া হবে। পরদিন সকালে আমরা জরিমানাপত্রে সই করি। কিন্তু সেদিন বিকালেই আবার আমাদেরকে নাকচ করে দেয়।’
আরিয়া প্রিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা বারবার আবেদন জানালে পরিচালক বলেন যে, প্রয়োজনে ক্ষমতা ছেড়ে দেব, তবু আমরা রাজি হব না। আমরা যখন স্যারকে অনুরোধ করি তখন তিনি ছাত্রত্ব বাতিল করে দেওয়ার হুমকি দেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভুইয়াঁ বলেন, ‘তাদের প্রত্যেকেরই মানবিক কিছু বিষয় রয়েছে, সেগুলো বিবেচনা করলে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া যায়। আমরা সবার কাছ থেকে পরবর্তীতে আর উপস্থিতির হার সংক্রান্ত সমস্যা হবে না মর্মে লিখিত পত্র নিয়েছি। এ বিষয়ে ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবো।’