বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে বিএইচবিএফসি’র বঙ্গবন্ধু পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় এসব কথা বলেন বিএইচবিএফসি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন। সভায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ১০ জানুয়ারী বাঙালী জাতির ইতিহাসে একটি চির স্মরণীয় দিন। আনন্দে উদ্বেলিত হওয়ার দিন, মুক্তির ও অপূর্ণ স্বাধীনতা পূর্ণতা প্রাপ্তির দিন। ঐদিনকে বাঙালী জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে আনন্দের দিন বলা হলেও অত্যুক্তি হবে না। বঙ্গবন্ধুর ২০ মিনিটের ঐতিহাসিক ভাষনটি খুব সুনিপুণভাবে বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে কিভাবে গঠন করতে হবে, কোন আদর্শ ও চেতনায় দেশ পরিচালিত হবে সেই বিষয়েও বঙ্গবন্ধুর সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা ছিল। সেদিন বঙ্গবন্ধু সশ্রদ্ধ চিত্তে সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান।
জাতির পিতা যে অসম্প্রদায়িক, ক্ষুধা দারিদ্র মুক্ত ও উন্নত সোনার বাংলা বিনির্মানের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে ৪টি কর্মযজ্ঞ বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়েছে তা হলো (১) নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ। (২) ১১ লক্ষ বাস্তুহারা রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরা। (৩) মানবতা বিরোধী অপরাধে বিচার করে দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা। (৪) সম্প্রতি কোভিড-১৯ মহামারিকে সফলভাবে মোকাবেলা করা। পরিশেষে তিনি সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহিত সকল কর্মসূচী বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহবান জানান। এ ধরণের একটি মহতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বিএইচবিএফসি শাখাকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু পরিষদ বিএইচবিএফসি শাখার সভাপতি তারেক ইমতিয়াজ খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বিএইচবিএফসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিঃ দায়িত্ব) অরুন কুমার চৌধুরী এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ডাঃ শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন ও আব্দুল মতিন ভূইয়া।
অরুন কুমার চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে এখনো আমাদের অনেক গবেষণার প্রয়োজন। শুধুমাত্র দিবস পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে দারিদ্রমুক্ত, ক্ষুধামুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়া সহজ হবে। বঙ্গবন্ধুর অন্যতম দর্শন ছিল বাংলায় কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ৭০ হাজার বাস্তুচ্যুত ও গৃহহীন মানুষকে এক সাথে একই দিনে নতুন বাড়ি উপহার দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের একটি মানুষও যেন গৃহহীন ও ভূমিহীন না থাকে এবং সবার জন্য হবে মানসম্মত বাসস্থান- প্রধানমন্ত্রীর এ আহবান বাস্তবায়নে বিএইচবিএফসি’র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে বিএইচবিএফসি পরিবারের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ জানান।
বিশেষ অতিথি ডাঃ শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন ও আব্দুল মতিন ভূইয়া ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষন এবং ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন জাতির জন্য সমান গুরুত্ব বহন করে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। ১৯৮১ সালে দেশ যখন স্বৈরাচার, স্বাধীনতা বিরোধী ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত সেই সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা নিঃস্ব ও রিক্ত হাতে এ দেশে ফিরে এসে দীর্ঘ ২১ বছর আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে জাতিকে সঠিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। তাঁরা বঙ্গবন্ধু পরিষদের দীর্ঘ ইতিহাস এবং নবীন কর্মকর্তাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান।
ভার্চুয়াল সভায় বক্তব্য রাখেন বিএইচবিএফসি’র বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. খাইরুল ইসলাম, অফিসার কল্যাণ সমিতির আহবায়ক ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম, বিএইচবিএফসি’র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিঃ প্রিন্সিপাল অফিসার ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ও প্রিন্সিপাল অফিসার মো. এনামুল হক, সভাপতি ও সিঃ প্রিন্সিপাল অফিসার তারেক ইমতিয়াজ খান এবং বঙ্গমাতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র অফিসার মো. আবু সাঈদ।