মাদ্রাসা দখলে নিতে হেফাজতের এ নেতা নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু উগ্র অনুসারীকে বারিধারায় নিয়ে আসেন। মাদ্রাসার অভ্যন্তরে থাকা মুফতি মুনীর হোসেনের অনুসারী শিক্ষক ও উগ্র ছাত্ররা মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত মোহতামিমের সহযোগী মুফতি জাকির হোসেনকে জিম্মি করে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করে। এসময়ে মুফতি জাকিরের মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে বন্দী করে রাখা হয়। বন্দী থাকা অবস্থায় তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলেও জানা যায়। মাদ্রাসায় বর্তমানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে এবং মাদ্রাসার ছাত্ররা এ পরিস্থিতিতে নিজেদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত বলে জানিয়েছে।
অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত মোহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসান ক্যু এর ঘটনা শুনে প্রাণভয়ে আর মাদ্রাসায় আসার সাহস দেখাননি।তাকে মাদ্রাসায় না আসার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করা হয়েছে। অথচ মাওলানা নাজমুল হাসানকে নুর হোসেন কাসেমী জীবদ্দশায় ভারপ্রাপ্ত মোহতামিম হিসেবে ঘোষণা করে যান। কিন্তু উগ্রপন্থীরা মাওলানা নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে মাদ্রাসার সুষ্ঠু পরিবেশকে মেনে নিতে পারছিলেন না।
এছাড়া মাওলানা নুর হোসেন কাসেমী তাঁর জীবদ্দশায় ওসিয়ত করে গিয়েছেন তার পরিবারের কোন সদস্য বিশেষ করে তার ছেলে জাবের কাসেমী যেন এ মাদ্রাসার কোন পদে নিয়োগ না পায়। কিন্তু কুচক্রীমহল নুর হোসেন কাসেমীর ওসিয়ত বরখেলাপ করে তার ছেলেকে ভুল বুঝিয়ে মাদ্রাসায় নিয়ে এসে মুহাদ্দিস হিসেবে বসিয়ে দেন। জাবের কাসেমীকে ঢাল বানিয়ে এ পদে বসানো ছিল মুফতি মনিরের চক্রান্তের অংশ।
সরকারবিরোধীদের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বারিধারা মাদ্রাসায় ক্যু করে মাদ্রাসা দখলে নিয়ে ভবিষ্যতে হেফাজতে ইসলাম ও সরকারবিরোধী গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই হবে মুফতি মুনীর ও তার সহযোগীদের মূল লক্ষ্য। মাদ্রাসা দখলে সরকারবিরোধী প্রভাবশালী আলেমরা মুফতি মুনীরের সকল ধরনের অপকর্মে পৃষ্ঠপোষকতা করছে বলে জানা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মুহাদ্দিস, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে সহযোগী না হলে তাদেরকে অপমান করে মাদ্রাসা হতে বের করে দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মাদ্রাসাটির অবস্থান কূটনৈতিক পাড়ায় বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কাছাকাছি হওয়ায় নিরাপত্তার দিক দিয়ে মাদ্রাসাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। বারিধারা মাদ্রাসায় কোন ধরনের উগ্রপন্থী কার্যক্রম বহিঃবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি এদেশকে জঙ্গীবাদী বা উগ্রবাদী রাষ্ট্র হিসেবে প্রচার করার সুযোগ করে দিতে পারে।
উল্লেখ্য, মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদে যুদ্ধাপরাধী এবং ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী থাকায় মাদ্রাসাটির রেজিস্ট্রেশন ইতোপূর্বেই বাতিল করা হয়েছে। এ ধরনের কর্মকান্ডে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে এবং অন্যান্য মাদ্রাসাগুলোতে এই জাতীয় ঘটনার পুণরাবৃত্তি হতে পারে।