তিনি বলেন, এত অল্প সময়ে এত অগ্রগতি বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে।
আজ সোমবার (০১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার এ সময় বিশ্ব অর্থনীতিতে সার্বজনীন মহামন্দা চলছে। এ সময়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে এগিয়ে চলছে। করোনাকালে অর্থনীতির চাকা সচল ও সাধারণ মানুষের জীবনমান স্বাভাবিক রাখতে তিনি ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশী প্রণোদনা দিয়েছেন। এতে অর্থনীতি যেমনি আবার ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে, তেমনি দেশের মানুষের জীবন যাত্রাও স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি বলেন, করোনার গভীর ক্ষতে বিশ্বের প্রায় সব দেশেরই জিডিপি সংকুচিত হয়েছে। আর জিডিপির প্রবৃদ্ধির দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে এবং বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ সময়ে দেশের প্ুঁজি বাজারে পুঁজি শতকরা ২৭ ভাগ বেড়েছে। প্রবাস আয় বেড়েছে ৪৩ ভাগ।
আ হ ম মুস্তফা কামাল করোনাপূর্ব সময়ে বর্তমান সরকারের এক যুগে দেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে দেশের এক অনন্য উচ্চতায় উত্তরণের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার কিংবদন্তী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সব ক্ষেত্রেই এ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে তিনি পদ্মা সেতু, কর্ণফুলি বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের উল্লেখ করেন। এছাড়া নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের উর্ধ্বগতির কথা তুলে ধরেন।
তিনি গত এক যুগে বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরে বলেন, ২০০৮-৯ অর্থ বছরে দেশের জিডিপি’র আকার ছিল ৯১ বিলিয়নের কিছু বেশী আজ তা দাঁড়িয়েছে ৩৩০ বিলিয়ন ডলারে। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৮তম অর্থনীতির দেশ এবং ২০৩৫ সালে তা হবে ২৫তম। ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত দেশের জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.৬ শতাংশ। আর এ সরকারের গত এক যুগে তা প্রায় সাড় ৬ শতাংশ এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে তা হয়েছে ৮.১৫ শতাংশ। এ সময়ে মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৪ ডলারে। রপ্তানি আয় ছিল আগে ১৪.১ বিলিয়ন ডলার। তা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪০ বিলিয়ন ডলারে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার। আগে চাল উৎপন্ন হতো ২ কোটি ৮১ লাখ মেট্রিক টন, এখন হচ্ছে ৩ কোটি ৩৫ লাখ টন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের গত এক যুগে এবং বর্তমান করোনার বৈশ্বিক সংকটকালেও সামষ্টিক অর্থনীতির সব সূচকেই উর্ধ্বগতি বজায় রয়েছে। আর এ ধারা অব্যাহত রেখেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সুখী-সমৃদ্ধ, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত ধনী দেশে পরিণত হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ মোকাবেলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, এ মহামারিতে যখন গোটা বিশ্ব পর্যদুস্ত তখন প্রধামন্ত্রীর বলিষ্ট ও দক্ষ নেতৃত্ব এবং সময়োপযোগি পদক্ষেপের ফলে দেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
তারা বলেন, এসব পদক্ষেপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় প্রশংসিত হয়েছে। এ জন্য বিশ্বে ৮ জন সফল নারী নেতৃত্বের তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া আমেরিকার সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের সমীক্ষায় বিশ্বের ১৮৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ করোনাকালের সাফল্যের দিক থেকে ২০তম স্থান অর্জন করেছে।