দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া সেই বিশ্বকাপে প্রস্তুতিপর্ব থেকে শুরু করে কোনো ম্যাচ হারেনি বাংলাদেশের যুবারা। সবশেষ ৯ ফেব্রুয়ারি পচেফস্ট্রুমের ফাইনালে তখনকার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালী ভারতীয় দলকে মাটিতে নামিয়ে শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছিলেন আকবর আলি, পারভেজ হোসেন ইমনরা।
বিশ্বকাপ শুরুর আগে দুই প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টাই এবং নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে মূল আসরে পদার্পন করে টাইগার যুবারা। প্রথম রাউন্ডে জিম্বাবুয়েকে ৯ উইকেট ও স্কটল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারানোর পর বৃষ্টিতে ভেসে যায় পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পায় বাংলাদেশ।
সেরা আটের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তানজিদ হাসান তামিমের ৮০, শাহাদাত হোসেন দীপুর ৭৪ ও তৌহিদ হৃদয়ের ৫১ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ পায় ২৬১ রানের বড় সংগ্রহ। বোলিংয়ে নেমে বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানের ১৯ রানে ৫ উইকেটের সুবাদে প্রোটিয়াদের মাত্র ১৫৭ রানে অলআউট করে দিয়ে যুবারা তুলে নেয় ১০৪ রানের সহজ জয়, পেয়ে যায় সেমিফাইনালের টিকিট।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সামনে পড়ে নিউজিল্যান্ড যুবা দল। এবার আগে ব্যাট করে কিউইরা। শরিফুল ইসলাম, হাসান মুরাদ, শামীম হোসেনদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস থামে ২১১ রানে। জবাবে সেঞ্চুরি হাঁকান মাহমুদুল হাসান জয় (১২৭ বলে ১০০), তৌহিদ ও শাহাদাত উভয়েই করেন ৪০ রান। মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৫ বল হাতে রেখেই ফাইনালে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।
টাইগার যুবাদের মতোই উড়ন্ত যাত্রা ছিল ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলেরও। ফলে আগে থেকেই তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলছিল ৯ ফেব্রুয়ারির ফাইনাল ম্যাচে। যেখানে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। দুই পেসার তানজিম হাসান সাকিব ও শরিফুল ইসলামের আগুনে বোলিংয়ে শুরু থেকেই চাপে পড়ে যায় ভারত।
তবু বাঁহাতি ওপেনার জশবি যাসওয়াল ও তিলক ভার্মার ব্যাটে ধীরে ধীরে এগুতে থাকে তারা। একপর্যায়ে মাত্র ৩ উইকেটেই ১৫৬ রান করে ফেলে ভারত। সেখান থেকে মাত্র ২১ রানের বিনিময়ে বাকি ৭ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ, ভারতের ইনিংস থামে ১৭৭ রানে। অভিষেক দাস নেন ৩ উইকেট। তানজিম সাকিব ও শরিফুলের ঝুলিতে যায় ২টি করে উইকেট।
পরে দফায় দফায় বৃষ্টিতে শেষপর্যন্ত বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৬ ওভারে ১৭০ রান। জবাবে মাত্র ৮৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেললেও, চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া বাঁহাতি ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আবার মাঠে ফিরে করেন ৪৭ রান। আর অধিনায়ক আকবর আলি অপরাজিত ৪৩ রানের ইনিংস খেলে নিশ্চিত করেন দলের জয়।
যার ফলে ৪২.১ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ পৌঁছে যায় লক্ষ্যে, পেয়ে যায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ।