বিএসইসি সূত্র মতে, ওই নীতিমালার ওপর জনমত যাচাইয়ের পর তা চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে ফান্ডের আকার হবে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানিতে নগদ টাকা রয়েছে প্রায় এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বাকিগুলো রাইট বা বোনাস শেয়ারে রয়েছে। তবে ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে দাবিহীন টাকার পরিমাণের তথ্য বিএসইসির কাছে আসেনি। সব মিলিয়ে আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে ফান্ড গঠন করে পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দেওয়া যাবে বলে আশাবাদী বিএসইসি।
বিএসইসির খসড়া বিধিমালায় উল্লেখ রয়েছে, সব অবন্ঠিত লভ্যাংশ এবং ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে তিন বছরের অধিক সময় পড়ে থাকা অর্থ ও শেয়ার এ তহবিলে স্থানান্তর করা হবে। তিন বছরের হিসাব হবে লভ্যাংশ ঘোষণা বা অনুমোদনের দিন বা রেকর্ড ডেট থেকে। এক্ষেত্রে নগদ লভ্যাংশ বা অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা থাকায় কোনো সুদ অর্জিত হলে, তাও এ তহবিলে দিতে হবে।
তবে এ তহবিলে শেয়ার বা টাকা হস্তান্তরের পরও তা দাবি করতে পারবেন সংশ্নিষ্ট বিনিয়োগকারীরা। নিজের দাবির প্রমাণসহ সংশ্নিষ্ট কোম্পানি বা সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি বা ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংকের আছে আবেদন করতে হবে। আবেদনের এক মাসের মধ্যে ওই বিনিয়োগকারীর শেয়ার বা টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
খসড়ায় আরও প্রস্তাব করা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে কোনো বিনিয়োগকারীর কতটা অবন্ঠিত লভ্যাংশ বা অর্থ বা শেয়ার পড়ে আছে, তা সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ তহবিলকে হস্তান্তর করতে হবে। তবে এ তালিকা প্রকাশের বিষয়টি বিধিমালায় নেই।
স্থিতিশীলকরণ তহবিলটি ব্যবস্থাপনায় ১১ সদস্যের বোর্ড অব গভর্নরস থাকবেন, যার চেয়ারম্যান ছাড়াও তিনজন সদস্য মনোনীত করবে বিএসইসি। এছাড়া ডিএসই, সিএসই ও সিডিবিএল, সিসিবিএল, বিএপিএলসি থেকে একজন করে সদস্য থাকবে। অন্যদিকে তহবিলের প্রধানের পদ হবে চিফ অব অপারেশন। প্রথম বোর্ড গঠন করবে কমিশন। এছাড়া, তহবিল থেকে বাজারের তারল্যপ্রবাহ এবং গভীরতা বাড়াতে শেয়ার কেনাবেচা বা ধার দেওয়া বা ধার গ্রহণ করা হবে। শেয়ার কেনাবেচা করতে গিয়ে তহবিলের কোনো লোকসান না হয়, তার জন্য সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন করা হবে, থাকবে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও অডিট কমিটি।
গত বছরের ১২ নভেম্বর তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে অবণ্ঠিত লভ্যাংশের তথ্য চেয়ে একটি চিঠি ইস্যু করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)। সেখানে প্রতিষ্ঠান তিনটিকে পরবর্তী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য চেয়ে কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে ডিএসই কোম্পানিগুলোকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি আজম জে চৌধুরীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও ৭ দিন সময় বাড়িয়েছে বিএসইসি। এরপর ১৬ নভেম্বর ডিএসই, সিএসই ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) কাছে তথ্য চাওয়া হয়।