তবে ট্রাক ও সিমেন্টের মালিক কারা সেটির বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এব্যাপারে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ট্রাকের চালক ও হেলপারের পরিচয় নিশ্চিত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম।
রোববার (০৭ মার্চ) রোববার সন্ধ্যায় তিনি বলেন, শনিরাত রাতে কক্সবাজার শহরের কলাতলি মোড়ে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের চাপা দেয়ার ঘটনায় আরো একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো তিনজনে। নিহত ৩ জনের মৃতদেহ আইনী প্রক্রিয়া শেষে রোববার বিকেলে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত আরও নয়জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে ট্রাকের চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছে পুলিশ। বর্তমানে ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। যান্ত্রিক ক্রটি নাকি চালক বা হেলপালের গাফিলতিতে এ দুর্ঘটনা হয়েছে সে বিষয়টি জানতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেয়া হবে। এছাড়াও ট্রাকটি মালিক কে এবং সিমেন্টগুলো কোথা থেকে কার জন্য নেয়া হচ্ছে এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর ট্রাকটি কে চালিয়েছে, হেলপার কে ছিল কিংবা হেলপার ট্রাকটি চালিয়ে ছিল কিনা এই তথ্যগুলো সংগ্রহ এবং তাদেরকে আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোববার (৭ মার্চ) দুপুরে দুর্ঘটনাস্থল কলাতলীর মোড় এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি দুর্ঘটনাস্থলেই রয়েছে। ট্রাকের উপর বিধ্বস্ত সিএনজি অটোরিকশাটি রাখা হয়েছে এবং সিমেন্টের বস্তাগুলো নিচে পড়ে রয়েছে। ঘটনার পরপরই কলাতলীর মোড়ে ফুটপাত দখল করা অবৈধ দোকানপাট সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ট্রাফিক পুলিশের জনবলও বৃদ্ধি করা হয়েছে ওই এলাকায়।
এদিকে দুর্ঘটনায় নিহত পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। নিহতরা হল কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ কলাতলি এলাকার লাল মিয়ার স্ত্রী মোমেনা বেগম (৬৫), এপেক্স ক্লাব অব বাংলাদেশ-এর জেলা-২-এর সাবেক জেলা গভর্নর, এপেক্স ক্লাব অব ঢাকা মেট্রোপলিটনের সদস্য, রোটারী ক্লাব অব ঢাকা আরবানার সাবেক সভাপতি ও নৌ-স্কাউটার মোহাম্মদ শাহদাত হোসেন (৪১) এবং কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির সদস্য ও চকরিয়ার বদরখালি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ওসমান গণি (৪৮)।
এদের মধ্যে আইনজীবী ওসমান গণির রোববার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন উখিয়া উপজেলার কোটবাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আমিনের ছেলে অটোরিক্সা চালক জসিম উদ্দিন (২৫), একই এলাকার বশরত আলীর ছেলে মোহাম্মদ মুজিব (৪৫), কক্সবাজারস্থ ট্যুর গাইড কর্মি শফিউল্লাহ'র ছেলে মো. জিকু (৩০), মহেশখালী উপজেলার আবুল কাশেমের ছেলের মো. জয়নাল (৩৫) ও আবুল হোসেন (৪৫), আবুল হোসেনের ছেলে মো. রাশেদুল (১৬)। তবে আহত অন্য ৩ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।
পরে হতাহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শাহীন আব্দুর রহমান বলেন, রাতে দুর্ঘটনার পর ২ জনকে মৃত অবস্থায় এবং ১০ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ৩ জন গুরুতর এবং ৭ জন সামান্য আহত হয়েছে।