এদিকে, দেশে মার্চ ২০২০ থেকে এ পর্যন্ত এক বছরে করোনায় মারা গেছেন সাড়ে আট হাজারের মতো। এর মধ্যে ২০২০ সালে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮ হাজার ৪৯৬ জন।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে অসংক্রামক রোগে বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এসব রোগের মধ্যে রয়েছে হৃদরোগ, ক্যান্সার, কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস, শ্বাসতন্ত্রের রোগসহ আর কিছু রোগ।
জরিপ অনুযায়ী, ২০২০ সালে শুধু হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন ১ লাখ ৮০ হাজারের অধিক মানুষ; যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। অনুরূপভাবে, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে মারা গেছেন ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ; যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ৮৮ শতাংশ।
এছাড়া, আট রকমের ক্যান্সারে মারা গেছেন ৮৩ হাজার (বৃদ্ধির হার ৩২ শতাংশ), শ্বাসতন্ত্রের রোগে মারা গেছেন ৭৪ হাজার (বৃদ্ধির হার ৩৬ শতাংশ) আর কিডনি রোগে মারা গেছেন ২৮ হাজারের বেশী মানুষ। কিডনি রোগে মৃত্যুর হার বেড়েছে ১৬৪ শতাংশ।
নানা সামাজিক অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তা, করোনাকালীন জীবনযাত্রার ধরন পাল্টে যাওয়া, চর্বি জাতীয় খাদ্য বেশী গ্রহণ, কায়িক শ্রম না করা, খাদ্যে ভেজাল ও কীটনাশকের ব্যাপক ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাবার বা জাঙ্কফুড গ্রহণ- এসব কারণে এ জাতীয় অসংক্রামক রোগের প্রকোপ এবং মৃত্যু বাড়ছে বলে মত দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ। তাছাড়া ধূমপানও এ জাতীয় অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে, জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডাক্তার ফায়েজুল হাকিম বলেন, করোনাকালে অসংক্রামক রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা পেতেও সমস্যা হয়েছে, শুরুর দিকে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিক ও প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ ছিল। করোনা আতঙ্কের মাঝে অনেকে ডাক্তারের কাছেও যায়নি। তাছাড়া কর্মহীন বা বেকার ও ঋণগ্রস্ত হয়ে অসুখে ভুগে হতদরিদ্রদের কত মানুষ কিভাবে মারা গেছে তার পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, খাদ্যে ভেজাল ও ক্ষতিকর কীটনাশকের ব্যাপক ব্যাবহারের কারণেও অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। বেশি বেশি আক্রান্ত হচ্ছে কিডনি, লিভার, শ্বাসতন্ত্র, হৃদপিণ্ড। সরকারকে এ বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিতে পরামর্শ দেন ডাক্তার ফাইজুল হাকিম।