শনিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘ডায়ালগ অন বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এই কোয়ার্টারে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো ভালো করছে। ফান্ডগুলো ডিভিডেন্ড দিতে শুরু করেছে। আশা করছি, বিনিয়োগকারীরা ডিভিডেন্ড পেলে তাদের মধ্যে বিশ্বাস এবং আস্থা আসবে। এতে এ সেক্টর ঘুরে দাঁড়াবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সামনের দিনে সুকুকসহ অন্যান্য যেসব বন্ড বাজারে আসবে, সেখানে দেখবেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অনেক পার্টিসিপেশন থাকবে।’
বিএসইসি’র চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন ক্যাপিটাল মার্কেটের সাইজ ছিল সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকা। এখন সেটা ৫ লাখ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আমরা আশা করি, দুই বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে অনেক বড় পরিবর্তন দেখতে পাবেন। তখন আমরা শ্যালো ক্যাপিটাল মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রত্যেকটি রেগুলেটরের নিজস্ব দায়-দায়িত্ব আছে। সে দায়িত্ব অনুযায়ী, তাদের কাজ করতে হয়। আমাদেরও কিছু দায়-দায়িত্ব আছে। সেগুলো মেনেই আমাদের কেউ কাজ করতে হয়। কোন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে, কীভাবে তালিকাভুক্ত হবে, কী লভ্যাংশ দেবে, কীভাবে এজিএম করবে—এসব বিষয় দেখভাল করা আমাদের দায়িত্ব। সম্প্রতি আমরা খেয়াল করেছি, বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের সাথে আলোচনা না করেই কিছু কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। এ বিষয়ে আমরা দেশের সর্বোচ্চ মহলের সঙ্গে কথা বলেছি। তার নির্দেশেই আমি গভর্নরের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তার পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি হাইপ্রোফাইল টিম বিএসইসিতে আগামী ১৫ মার্চ আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসবে। সে বৈঠকে আমরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। যাতে আমরা ভবিষ্যতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারি। পাশাপাশি কোনো রেগুলেটরি সিদ্ধান্ত যেন কারো অসুবিধার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসলে সব ব্যাংকের পারফরম্যান্স কখনোই এক হবে না। কোনো ব্যাংকের কস্ট অব ক্যাপিটাল কম, কোনোটার বেশি। আবার কারো কস্ট অব ফান্ড কম, কারো বেশি। এছাড়া, ব্যাংকগুলোর ইন্টারেস্ট রেট একেক রকম—কারো কারেন্ট ব্যালেন্স অনেক বেশি, কারো কম, কারো এফডিআর রেট অনেক বেশি। এসব কারণে একেক ব্যাংকের পারফরম্যান্স একেক রকম হবে। তার ওপর নন-পারফরমিং লোন রয়েছে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ দেওয়ার মাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া সঠিক হবে না। অনেকগুলো ভেরিয়েবলের ওপর ব্যাংকের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। তাই সম্মিলিতভাবে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলে ভালো হবে। তবে এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। যেটা কোনোভাবেই অপেক্ষা করা যাবে না।’
বাজেট বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির করের ব্যবধান মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ। এ ব্যবধান কমপক্ষে ১৫ শতাংশ হতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বিএসইসি। তা না হলে ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহী হবে না।’
ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশেদুল ইসলাম।