‘বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ’

‘বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ’
বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম একটি জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে বাঁচতে এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এই বিষয়টি নিয়ে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশকে একটি সর্বজন গ্রহণযোগ্য, ব্যাখ্যা যোগ্য, কার্বন উদগীরণ হ্রাসকরণকে হিসেব করা যায় এমন একটি পুনর্মূল্যায়িত এনডিসি তৈরি করতে হবে।

শনিবার (২০ মার্চ) ঢাকায় সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি) এর উদ্যোগে ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রণয়ন: প্রেক্ষাপট এবং প্রত্যাশা’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বায়ুমণ্ডলে তাপ বৃদ্ধিকারী এসব গ্রিন হাউস গ্যাস এর উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা ইতিমধ্যে শিল্প-বিপ্লবপূর্ব পর্যায় থেকে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়েছে। বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা বৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী বাড়ছে আবহাওয়াজনিত দুর্যোগ এবং দুর্যোগ জনিত ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ। কার্বন উদগীরণ কমানোর মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে একটি সহনীয় মাত্রায় সীমাবদ্ধ রাখাকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হিসেবে বিবেচনা করে ইউএনএফসি সুস্পষ্টভাবেই সর্বাগ্রে কার্বন উদগীরণ হ্রাসের বিষয়ে রাষ্ট্রসমূহকে তাগিদ দিয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০১৫ সালে গৃহীত প্যারিস এগ্রিম্যান্টের প্রাক্কালে রাষ্ট্রসমূহ তাদের আইএনডিসির মাধ্যমে কার্বন উদগীরণ হ্রাসের যে অবদান নির্ধারণ করেছিল, তা কোনোভাবেই প্যারিস এগ্রিমেন্টর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য- পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেডের নিচে সীমাবদ্ধ রাখার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, রাষ্ট্রসমূহ যদি তাদের আইএনডিসি অনুসারে কার্বন উদগীরণ হ্রাসের অবদান সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করে। তবুও পৃথিবীর উষ্ণতা শিল্প-বিপ্লবপূর্ব পর্যায় হতে তিন থেকে চার ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেড পর্যন্ত বাড়তে পারে। যা পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বের প্রতি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ও বিশ্বের গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রি সেন্ট্রিগ্রেডের নিচে সীমাবদ্ধ রাখার যৌক্তিকতায় ও জলবায়ু বিজ্ঞানীদের অব্যাহত চাপের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনএফসিসিসি একটি গাইডলাইন তৈরি করে এবং সদস্য দেশসমূহকে এই গাইডলাইন অনুসরণ করে বর্ধিত প্রণয়ন করতে বলে।

সাবেক অতিরিক্ত সচিব ডা. নুরুল কাদের বলেন, আমি বিশ্বাস করি এনডিসি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ অনেক জরুরি। সবাইকে নিয়ে এই রকম একটি জাতীয় দলিল তৈরি করা দরকার। অনেক সময় যদিও সেটি বাস্তবায়ন করা যায় না। বর্তমান বাস্তবতায় রাষ্ট্রগুলো যে টার্গেট দিয়েছে সেটাকে যদি তিনগুণ ও বৃদ্ধি করা হয় তবুও দুই ডিগ্রি সেট্রিগ্রেডে রাখা যাবে কি না সন্দেহ আছে। কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তেমন মনযোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না। আমাদের টার্গেট বাড়াতে হবে সেটি যদি বলা হয় তাহলে বলতে হবে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে আমরাও রক্ষা পাবনা এবং এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে আমদের জিডিপির জন্যও অনেক ক্ষতিকর প্রভাব বয়ে আনবে।

বি.আই ডি.এস এর সাবেক গবেষণা পরিচালক ডা. এম আসাদুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, আমরা মূলত কার্বন উদগীরনের যে কথাটি বলছি সে কার্বন কিন্তু আসলে বেশির ভাগই এনার্জি সেক্টর থেকে আসে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা দেশ উন্নত রাষ্ট্র হোক, তা জনগণও চায়, কিন্তু উন্নত রাষ্ট্র হতে হলে কিছু নিয়মনীতিও মানতে হবে। আমাদের টেকসই উন্নয়নের দিকে যেতে হবে সেই বিষয়টিও বুঝতে হবে।

আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা এনডিসির মতো একটি ডকুমেন্ট মিনিস্ট্রির হাতে ছেড়ে দিয়েছি। এটি কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক নয়। এটি ন্যাশনাল ডকুমেন্ট না হয়ে মিনিস্ট্রি ডকুমেন্ট হয়ে গেছে। এনডিসি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াটিতে সকলকে সম্পৃক্ত করতে হবে এবং এমন একটি ডকুমেন্টকে অবশ্যই সংসদে পাঠিয়ে চূড়ান্ত করতে হবে। এতে করে বাস্তবায়ন এবং জনসম্পৃক্তকরণ ও সহজ হবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু