সেটি দারুণভাবেই কাজে লাগিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। বোলিংয়ে আলআমিন হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান এবং ব্যাটিংয়ে ফর্মের চূড়ায় থাকা লিটন দাসের নৈপুণ্যে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটিতে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতলো বাংলাদেশ দল। যার ফলে প্রথমবারের মতো কোনো দলের বিপক্ষে তিন সিরিজের সব ম্যাচেই অপরাজিত থাকল টাইগাররা।
ম্যাচে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১১৯ রান করতে সক্ষম হয়েছিল সফরকারী জিম্বাবুয়ে। জবাবে বাংলাদেশ দলের লক্ষ্যে পৌঁছতে লেগেছে মাত্র ১৫.৪ ওভার, হারিয়েছে ১টি মাত্র উইকেট। ‘ব্যাক টু ব্যাক’ ফিফটি হাঁকিয়ে জয়ের নায়ক দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন দাস।
১২০ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ১০ উইকেটের জয়ই দেখছিল বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের বিশ্রামে দলে সুযোগ পেয়ে লিটনকে যথাযথ সঙ্গ দিয়েছেন আরেক বাঁহাতি ওপেনার নাঈম শেখ। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতেই ৭৭ রান পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ১১তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৩৩ বলে ৩৩ রান করেছেন নাঈম।
তবে অপরপ্রান্তে লিটন ছিলেন স্বপ্রতিভ। সেই টেস্ট ম্যাচ থেকে যে শুরু হয়েছে তার রানের ফোয়ারা, তা বজায় থাকল একদম শেষ ম্যাচেও। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ বলে ৬০ রানের ইনিংস, হাঁকিয়েছেন ৮টি চার। দ্বিতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৪৩ রানের জুটি গড়ার পথে সৌম্য সরকার খেলেছেন ১৬ বলে ২০ রানের ছোট্ট এক কার্যকরী ইনিংস।
এর আগে গত সোমবার সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে ২০০ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়ে জিতেছিল ৪৮ রানের বড় ব্যবধানে। আজও টসে জিতেছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে বোলারদের পরীক্ষা করার জন্য নেন আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত।
পরীক্ষায় দারুণভাবে পাস করেছেন আলআমিন হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদি হাসানরা। চার ওভারে মাত্র ২২ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন আলআমিন, সমান ওভারে ২৫ রানে ২ উইকেট শিকার মোস্তাফিজের।
এছাড়া সাইফউদ্দিন, আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদির ঝুলিতে গেছে ১টি উইকেট। ক্যাচ মিস হওয়ার কারণে উইকেটের খাতাটা শূন্যই থেকে গেছে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদের। তিনি ৪ ওভারে খরচ করেছেন ২৫ রান।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই তিনাশে কামুনহুকামুইয়ের উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মোস্তাফিজকে দর্শনীয় এক কভার ড্রাইভে চার মারলেও ১০ বলে ১০ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে চাপ সামাল দিতে গিয়ে আবার বেশি বল হজম করে ফেলেন ব্রেন্ডন টেলর এবং ক্রেইগ আরভিন। দুজনের জুটিতে আসে ৫৭ রান, ৫২ বল খেলে। ইনিংসের দ্বাদশ ওভারে ফেরার আগে ৩৩ বলে ২৯ রান করেন আরভিন। তবে একপ্রান্ত আগলে রাখেন টেলর।
এ ডানহাতি অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অবশ্য পুরো ইনিংসেই আউট হননি। মাঝে আসা-যাওয়ার মিছিলে নাম লেখান শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, রিচমন্ড মুতুমবামি, টিনোটেন্ডা মুতোমবদজি, ওয়েসলে মাধেভেররা। এদের মধ্যে দুই অঙ্কে যান শুধুমাত্র রাজা, করেন ১০ বলে ১২ রান।
ইনিংসের শেষপর্যন্ত খেলে টেলর অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে। দেখেশুনে খেলে এ রান করতে তার মোকাবেলা করতে হয়েছে ৪৮টি ডেলিভারি। নিজের ইনিংসে ৬ চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন টেলর।