সূত্র মতে, গেল সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকে। কিন্তু ‘লকডাউন’ আতঙ্কে রোববার বড় পতন হয়। আর ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ায় বৃহস্পতিবারও বড় দরপতন হয়। এতেই সপ্তাহ শেষে পতনের খাতায় নাম লেখাতে বাধ্য হয়েছে শেয়ারবাজার।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫৫৯ কোটি টাকা।
আগের তিন সপ্তাহে ডিএসই'র বাজার মূলধন কমে ২৪ হাজার ১৭৪ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে বা কমেছে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৫ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৩০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৫৬ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। তার আগের ১০৭ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ১৩৪ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ চার সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৩১৪ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পতন হলেও গত সপ্তাহে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক কিছুটা বেড়েছে। তবে আগের তিন সপ্তাহে সূচকটির টানা পতন হয়। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩৭ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৫২ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ৮০ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
অপরদিকে ইসলামী শরিয়াহ্ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকের টানা চার সপ্তাহ পতন হয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৪ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪১ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৫ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৪ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ২৯ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং তার আগের সপ্তাহে কমে ১৮ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচকের পতনের পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১০৮টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৫টির। আর ৫৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৬৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৪২ কোটি ২৮ লাখ টাকা বা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩২৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ২৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ২৯৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা বা ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ। মোট লেনদেন বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো, রবি, এশিয়া প্যাসেফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম, সামিট পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স।