সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে আগত যাত্রীদের টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে। অনেকেই আবার নিদিষ্ট তারিখে ফ্লাইট আছে কিনা খোঁজ নিতে আসেন।
যশোর থেকে আসা সৌদি প্রবাসী আরিফ ইসলাম অর্থসংবাদকে জানান, গতকালকেও আমরা এখানে এসেছিলাম। টিকিট গতকালকেই পেয়েছি। আগের তুলনায় এখন টাকা বেশি দিতে হয়েছে। এছাড়া কয়েকদিন ধরে খুব ভোগান্তিতে ছিলাম। তবে কবে নাগাদ আমার ফ্লাইট সেটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আজকে আবার এসেছি। গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে আমাদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
অন্যদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সিঙ্গাপুর ছাড়া বাকি চারটি দেশের টিকিট মিললেও সিঙ্গাপুরের টিকিট মিলছে না। এ বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মতিঝিল অফিসের কর্মরতরা।
এর আগে গতকাল রোববার সামান্য হট্টগোল তৈরি হলেও আজ শৃঙ্খলা ভাবেই সবাই টিকিট নিচ্ছেন। রোববার যাত্রীদের বাড়তি চাপে অফিসের গ্লাস এবং মেইন ফটকের তৈরি গ্লীলের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এদিন সিকিউরিটিতে নিয়োজিতরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। রয়েছে পুলিশের উপস্থিতি, তারাও শৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়াতে সহযোগীতা করছেন।
এদিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আগত যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। তারা বলছেন, একদিকে গণপরিবহন বন্ধ অন্যদিকে পথে পথে পুলিশি চেকপোষ্টে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে, পরে টিকিট পাসপোর্ট দেখিয়ে তাদেরকে ছাড়পত্র দেওয়া হয় চেকপোস্ট থেকে। আর গণপরিবহন বন্ধ হয় নিজেরা নিজেরাই প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস ভাড়া করে আসেন বিমান অফিসে। এতে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে তাদের।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার গমনেচ্ছু আটকে পড়া প্রবাসীদের টিকিট দেয়া হলেও সিঙ্গাপুরগামিদের টিকিট আপাতত মিলছে না। বিমানের ফ্লাইট নির্দিষ্ট না হওয়ায় সিঙ্গাপুরগামিদের টিকিট নেই বলে জানানো হচ্ছে।
মতিঝিল বিমান অফিসে কর্মরত একজন জানান, সিঙ্গাপুরগামি বিমানের ফ্লাইট নির্দিষ্ট হয়নি। সে ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রির প্রশ্নই আসে না, আগে ফ্লাইট ঠিক হবে তারপরেই টিকিট বিক্রি শুরু হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া গতকাল এখানে সামন্য হট্টগোল তৈরি হলেও আজ শৃঙ্খলা ভাবেই সবাই টিকিট নিচ্ছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, এ ৫টি দেশে গমনেচ্ছু প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে যাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স রয়েছে, তাদেরকে বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যাদের ভিজিট ভিসা আছে, কিন্তু বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স নেই, তারা বিদেশ গমনে অগ্রাধিকার পাবেন না। তবে ভিজিট ভিসা নিয়ে যেসব বাংলাদেশি কর্মের উদ্দেশ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবেন তারা বিএমইটি’র ছাড়পত্র নিয়ে যেতে পারবেন।
এক্ষেত্রে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অন্যান্য এয়ারলাইন্স এবং সংশ্লিষ্ট দেশসমুহের ন্যাশনাল ক্যারিয়ারসহ অন্যান্য ক্যারিয়ার বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে।
যেসব যাত্রী টিকেট কেনা সত্ত্বেও লকডাউনের কারণে বিদেশ গমন করতে পারেননি, তাদেরকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বা সংশ্লিষ্ট দেশসমুহের ন্যাশনাল ক্যারিয়ারের অতিরিক্ত বিশেষ ফ্লাইটের মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণ করার ব্যবস্থা করা হনে।
টিকেটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বিশেষ ফ্লাইটের গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং চার্জ সাধারণ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য চার্জের সমপরিমাণ প্রদেয় হবে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিদেশগামী যাত্রীদের পিসিআর টেস্ট নির্বিঘ্নে এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে ফলাফল প্রদান করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
কঠোর লকডাউন চলাকালিন সময়ে এ ৫ দেশ ছাড়া অন্যান্য দেশে যারা জরুরি প্রয়োজনে যেতে ইচ্ছুক, তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র সাপেক্ষে ট্রানজিট-প্যাসেঞ্জার হিসেবে বিশেষ ফ্লাইটে ভ্রমণ করতে পারবেন। যাত্রীরা এয়ারপোর্টে আসার পথে পাসপোর্ট/ভ্যালিড ভিসা/বিমানের টিকিট/বিএমইটি কার্ড অথবা নিরাপত্তা এজেন্সি কর্তৃক ইস্যুকৃত পাস সঙ্গে রাখবেন।
অন্যদিকে প্রবাসীরা জরুরি প্রয়োজনে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের শর্তে দেশে আসতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলকভাবে প্রদর্শন করতে হবে যাত্রীকে।