সানরাইজার্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই চেন্নাইয়ের ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মুরালিধরন। সেখানে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়ে তাঁর করোনারি ধমনিতে ব্লক ধরা পড়ে। ফলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যানজিওপ্লাস্টি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। মুরালিও সে পরামর্শ পালন করেছেন। ধমনি ব্লক কাটানোর জন্য তাঁর হৃদ্যন্ত্রে ‘স্টেন্ট’ পরানো হয়েছে। অ্যানজিওপ্লাস্টির পর তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।
মুরালির বুকের অবস্থা যে কয়েক দিন ধরেই এমন, সেটা জানিয়েছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের প্রধান নির্বাহী শানমুগানাথান, ‘হৃদ্যন্ত্রের ব্লক নিয়ে তিনি আইপিএলে আসার আগেই শ্রীলঙ্কার ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ করে এসেছেন। প্রথমে বলা হয়েছিল, তাঁর হৃদ্যন্ত্রে কোনো স্টেন্ট পরানোর দরকার নেই। কিন্তু চেন্নাইয়ে আসার পর তিনি অ্যাপোলো হাসপাতালে গেলে সেখানকার ডাক্তাররা তাঁকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অ্যানজিওপ্লাস্টি করার পরামর্শ দেন। তিনিও তাড়াতাড়ি অ্যানজিওপ্লাস্টি করে ফেলেন।’ স্টেন্ট পরানোর পর মুরালিধরন বেশ সুস্থ, জানিয়েছেন শানমুগানাথান, ‘তিনি এখন বেশ সুস্থ। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যেই তাঁকে আবার মাঠে দেখা যাবে।’
তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বিসিসিআইয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সাত দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে এই কিংবদন্তি অফ স্পিনারকে। ২০১৫ সাল থেকে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলিং কোচ আর মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কিছুদিন আগেই ৪৯-এ পা দেওয়া এই তারকা স্পিনার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে উইকেট নিয়েছেন ১ হাজার ৩৪৭টি—টেস্টে ৮০০, ওয়ানডেতে ৫৩৪ ও টি-টোয়েন্টিতে ১৩। শ্রীলঙ্কার হয়ে ১৩৩ টেস্ট, ৩৫০ ওয়ানডে ও ১২ টি-টোয়েন্টি খেলা এই স্পিনার টেস্টে ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ৫ উইকেট (৬৭) ও ১০ উইকেট (২২) পাওয়ার রেকর্ড গড়েছেন।
মুরালির মতো এই সমস্যা কিছুদিন আগে ভারতের সাবেক দুই অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী ও কপিল দেবেরও হয়েছিল। গত বছর অক্টোবরে একই ভাবে কপিল দেবের হৃদ্যন্ত্রে স্টেন্ট বসাতে হয়। জানুয়ারি মাসে স্টেন্ট বসে সৌরভ গাঙ্গুলীর। গত ২ জানুয়ারি বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সৌরভ। দেখা যায়, সৌরভের মৃদু হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তখন তাঁর তিনটি করোনারি ধমনিতে ব্লক ধরা পড়ে। চিকিৎসকেরা তখন একটি স্টেন্ট পরিয়েছিলেন তাঁর ধমনিতে। সেবার ভারতের বিখ্যাত হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি দেখতে এসেছিলেন সৌরভকে। সে সময় তিনি বলেছিলেন, সঠিক সময় হাসপাতালে আসাতেই বড় কোনো বিপদ হয়নি তাঁর। তিনি জানিয়েছিলেন, জীবনের একটা পর্যায়ে হৃদ্যন্ত্রের ধমনিতে ব্লক হওয়া খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।