তিনি বলেন, ডিজিটাল শিক্ষা প্রসারে সুযোগের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। আজকের ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার জাদুটি হচ্ছে ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ বছরে বাংলাদেশ ডিজিটাইজেসনসহ সকল ক্ষেত্রে পৃথিবীর অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
শনিবার (১ মে) ঢাকায় ময়মনসিংহ জেলা প্রতিষ্ঠার ২৩৩তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বৃহ্ত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, অধ্যাপক যতীন সরকার, বৃহত্তর ময়মনসিংহ কর্মজীবী সমিতির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসান, বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আবদুল মান্নান, আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক আবদুস সামাদ এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ প্রমূখ বক্তৃতা করেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান শেলী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি জনাব মোস্তাফা জব্বার বৃহত্তর ময়মনসিংহের ইতিহাস ঐতিহ্য এবং ২৩৩ বছর আগে জেলা প্রতিষ্ঠার ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরে বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ পলিমাটি দিয়ে গড়া, এটি একটি বৃহৎ শস্য ও মৎস্যসহ অন্যান্য সম্পদ সমৃদ্ধ জনপদ।
তিনি বৃহ্ত্তর ময়মনসিংহের সব জেলাতে শিক্ষা বিস্তারে বিশেষ করে ডিজিটাল শিক্ষার প্রসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন, আমার গ্রামে স্বাধীনতার পর ৭২ সালে বিশেষ করে হাওরে প্রাথমিক শিক্ষার পর হাইস্কুলে পড়ারও সুযোগ ছিল না, সেই হাওরের মানুষ এখন সেখানে মাস্টার ডিগ্রি পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। হাওরের প্রতিটি গ্রামের পাশ দিয়ে এখন সাব মার্জেবল রাস্তা হয়েছে। ডিজিটাল সুপার হাইওয়ে তৈরি হয়েছে। হাওর এলাকায় আছে টেলিটক নেটওয়ার্ক। গড়ে ওঠছে ১২ হাজার ওয়াইফাই জোন।
নেত্রকোনায় আইটি ট্রেনিং সেন্টার, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজ, জামালপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলে হাইটেক পার্ক ও জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হচ্ছে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম গর্ব করে যে ত্রিশালের কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল যেখানে এখন সাড়ে সাত হাজার ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করে।
মন্ত্রী মেধা ও সৃজনশীলতার দিক থেকে ময়মনসিংহের মানুষদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য মেধা ও সৃজনশীলতার খুবই প্রয়োজন। মন্ত্রী পরিকল্পিত উপায়ে আড়াই হাজার বর্গমাইলের বিস্তীর্ণ হাওরে পরিকল্পিত উপায়ে দেশি মাছের চাষ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন , শস্য সম্পদের মতো হাওরের মৎস্য সম্পদ দেশের মাছের চাহিদা মিটিয়েও রপ্তানিতে ভূমিকা রাখতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৭৮৭ সালে ১ মে ময়মনসিংহ জেলা সৃষ্টি হয়। এই জেলার আকার সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৬৯ সালে ময়মনসিংহ জেলা থেকে টাঙ্গাইল মহকুমাকে এবং ১৯৭৮ সালে জামালপুর মহুকুমাকে পৃথক করে জেলায় উন্নীত করা হয়। ১৯৮৪ সালে ময়মনসিংহ জেলা থেকে শেরপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ মহকুমাকে পৃথক পৃথক জেলায় উন্নীত করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বৃহত্তর ময়মনসিংহের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরে বিস্তারিত আলোকপাত করেন।