শনিবার (৮ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে দেশের অন্যতম শীর্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ লিমিটেডের চিফ ইনভেস্টমেন্ট আফিসার রিয়াজ ইসলাম এ কথা বলেন। রাজধানীর বাড্ডায় অ্যামেরিকান চেম্বার অব কমার্সের (অ্যামচেম) সম্মেলনকক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অ্যামচেম প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
রিয়াজ ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারের বিকাশ ও স্থিতিশীলতায় মিউচুয়াল ফান্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ বাস্তবতায় বিএসইসির বর্তমান কমিশনও মিউচুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির বিকাশকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট আইনটি সময়োপযোঈ করা না হলে তাদের আন্তরিক চেষ্টার পূর্ণাঙ্গ সুফল পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
মিউচুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির বিকাশে ফিল্যান্সিয়াল লিটারেসি তথা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ভাল পারফর্ম করা সত্ত্বেও বাজারে অনেক ফান্ডের ইউনিট তার সম্পদ মূল্যের (এনএভি) ৩০/৪০ শতাংশ ডিসকাউন্টে কেনাবেচা হয়। এটি খুবই অস্বাভাবিক। উন্নত বাজারগুলোতে মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের বাজার মূল্য তার এনএভি’র চেয়ে ৫ থেকে ১০ শতাংশ কম-বেশি হয়ে থাকে।
রিয়াজ ইসলাম মিউচুয়াল ফান্ড আইন সংশোধন করে বাই-ব্যাক তথা স্পন্সর বা অ্যাসেট ম্যানেজার কর্তৃক বাজার থেকে ইউনিট কিনে নেওয়ার সুযো রাখার প্রস্তাব করেন।
তিনি গত ১০ বছরে এলআর গ্লোবাল পরিচালিত মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর পারফরম্যান্সের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বাজারের বড় উত্থান-পতনের মধ্যেও এলআরের ফান্ডগুলোর পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ছিল। নানা সূচকের আলোকে এলআর গ্লোবাল সেরা পারফরমার।
এলআর গ্লোবালের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার বলেন, কিছু অনাহূত সমস্যার কারণে গত ৫ বছর এলআর গ্লোবালের কার্যক্রমের গতি কম ছিল। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব সমস্যার অনেকগুলোর সমাধান হয়ে গেছে। এই কমিশন খুবই আন্তরিক। এলআর গ্লোবাল এই কমিশনের সাথে গঠনমূলকভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড আইন সশোধনের মাধ্যমে আরও ইতিবাচক পরিবেশ হলে এলআর গ্লোবাল নতুন কিছু মেয়াদী মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে আসার চেষ্টা করবে। নইলে বে-মেয়াদী ফান্ডের দিকে নজর দিবে। যেভাবেই হোক আগামীতে ফান্ডের সংখ্যা বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের হাওয়া পরিবর্তনে এলআর গ্লোবাল যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করার পরিকল্পনায় প্রস্তুত রয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসাবে এলআর গ্লোবাল নিম্নলিখিত বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করবে:
(ক) এলআর গ্লোবাল বিনিয়োগকারীদের উচ্চতর ঝুঁকি সমন্বয় করে রিটার্ন প্রদান করবে;
(খ) আমরা বিএসইসিকে ১০০ শতাংশ সহায়তা প্রদান করব যাতে সংস্কারগুলি বাস্তবে বাস্তবায়িত হয় এবং পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে;
(গ) আমরা আমাদের প্রতিযোগী, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, উদ্যোক্তা, সাংবাদিক, সাধারন এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীগ্ণ সহ যে কোনো আগ্রহী পক্ষের সাথে অংশীদার হতে আগ্রহী যাতে করে সম্মিলিতভাবে আমরা বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সকল সম্ভাবনা সমূহ উদঘাটন করে লাভবান হতে পারি;
(ঘ) আমরা পুনরায় কাজ শুরু করব যাতে আমাদের দেশে বিদেশী বিনিয়োগ নিয়ে আসা যায় যা বিগত ২০১৫ সাল হতে বিঘ্নিত হয়েছিল;
নতুন কমিশন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা বাড়ানো, কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া, নানা আইন সময়োপযোগী করা, বাজারে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ, নতুন নতুন প্রোডাক্ট চালু ইত্যাদি যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তার মাধ্যমে বাজারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার রোনাল্ড মিকি, এসিএমএ এবং হেড অব লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স মনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।