জানা যায়, রাজধানী ত্রিপলী হতে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণাঞ্চলীয় মরুভূমির শহর বানি ওয়ালিদের দুর্গম এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়।
মঙ্গলবার (১১ মে) লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র ‘অর্থসংবাদ’কে জানায়, দেশটির সেনাবাহিনীর ত্রিপলী অঞ্চলের ৪৪৪-তম ব্রিগেড অপহরণকারী চক্রের ১৬টি আস্তানায় এই অভিযান চালিয়ে জিম্মি অভিবাসীদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত সকল অভিবাসী সুস্থ এবং নিরাপদে আছে বলে ব্রিগেডটির পক্ষ থেকে জানানাে হয়েছে।
এছাড়াও পরবর্তীতে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হবে বলে ব্রিগেডটি জানিয়েছে। তবে উদ্বারকৃত অভিবাসীরা কোন কোন দেশের নাগরিক তা এখনাে জানানাে হয়নি। কিন্তু ব্রিগেড কর্তৃক প্রকাশিত ছবি দেখে উদ্ধারকৃতদের মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছে বলে জানা যায়।
লিবিয়ার বানি ওয়ালিদ শহরে জিম্মি অভিবাসীদের উদ্ধার সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে দূতাবাস থেকে লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যােগাযােগ করে এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেওয়া হয়। দূতাবাস হতে স্থানীয় অপ্রাতিষ্ঠানিক সূত্রে উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের পরিচয় জানার চেষ্টা করা হয়।
বিভিন্ন সূত্র হতে প্রাপ্ত তথ্যমতে, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত দুইজন বাংলাদেশির পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়েছে।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে একজনের কাপড়-চোপড় এবং শারীরিক গঠন দেখে তাকে লিবিয়ায় জিম্মি ২৪ জনের মধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত নির্যাতনের ভিডিওতে প্রদর্শিত ভুক্তভােগী মাদারীপুর সদর উপজেলার ধুলাইল ইউনিয়নের চাছার গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ হােসেন জনি বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
অন্যদিকে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া একজনের ভাইয়ের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২৬ এপ্রিল ২০২১ তারিখে পাচারকারীদের সহায়তায় তার ভাই বাংলাদেশ হতে দুবাই গমন করেন এবং চলতি মাসের ৩ তারিখে দুবাই হতে সাইপ্রাসে ট্রানজিট হয়ে লিবিয়ার বেনগাজীতে আসেন। কিন্তু স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে বেনগাজী হতে ত্রিপলী আসার সময় তার ভাই অপহৃত হন বলে তিনি জানান। সম্প্রতি তার ভাই দেশে ফোন করে মুক্তিপণের জন্য নির্যাতনের বিষয়টি পরিবারকে জানিয়ে দ্রুত অর্থ জোগাড় করার কথা জানান। এছাড়া তার সাথে একই রুমে ১০ জন বাংলাদেশি জিম্মি ছিলেন বলেও জানিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, তারা সকলেই মানবপাচারকারীদের সহায়তায় সাগর পথে ইতালি গমণের জন্য লিবিয়ায় গেছেন।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে নিশ্চিত হওয়া দুই জন বাংলাদেশির মধ্যে একজন হলেন মো. জায়েদ বিশ্বাস। মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার বালিগ্রামের উত্তর বাঘরিয়ায় তার বাড়ি এবং অপরজন হলেন আদনান টিটু। মাদারীপুর জেলার ঘটমাঝির জাওদি এলাকায় তার বাড়ি।
দূতাবাস হতে উদ্ধারকৃত বাংলাদেশিদের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বক্ষণিক যােগাযােগ রাখা হচ্ছে বলে জানা যায়।