যুক্তরাষ্ট্রে ‘দি রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়াল অব বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট’ শীর্ষক এ রোড শো’টি আগামী ২৬ জুলাই থেকে ৭ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, দেশের পুঁজিবাজারকে বিদেশিদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই অংশ হিসেবে বিশ্বের বেশ কিছু দেশে রোড'শো করে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়কে ব্র্যান্ডিংয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে বিএসইসি। এরমধ্যে চলতিবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দুবাইয়ে সপ্তাহব্যাপি রোডশো করেছে সংস্থাটি। রোডশোতে দুবাইয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ি চেম্বারের প্রতিনিধিরা একাধিক সভা-সেমিনারে অংশ নেন। ওই রোডশোতে দেশের পুঁজিবাজারে বিপুল পরিমান বৈদেশিক বিনিয়োগের আশ্বাস পায় বিএসইসি ও অংশীজনরা। এরপর সৌদি আরবের রিয়াদ ও দাম্মামে এবং সুইজারল্যোন্ডের জুড়িখে রোডশোর প্রস্তুতি নেয় কমিশন। কিন্তু বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতায় প্রস্তাবিত সময়ে রোড শো আয়োজন থেকে সাময়িকভাবে পিছিয়ে আসে সংস্থাটি। তবে এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় কয়েকটি শহরে রোডশো আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে কমিশন। আগামী ২৬ জুলাই থেকে শুরু হয়ে ০২ আগস্ট পর্যন্ত ৭ দিনব্যাপি এই রোডশোটি করতে চায় বিএসইসি।
বিএসইসি সূত্র জানায়, বিগত দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভীষণভাবে এগিয়েছে। এমনকি চলমান মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সহনশীল ছিল এবং অল্প সময়ের মধ্যেই এটি উন্নয়নের স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসবে। সারাদেশব্যাপি প্রতিটি ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের অর্থর্নীতির প্রয়োজন বড় ধরনের দীর্ঘ-মেয়াদি অর্থায়ন। সাধারণত গণ অবকাঠামো প্রকল্পতে অর্থায়ন আসে সরকারের উন্নয়ন বাজেট থেকে। ব্যাক্তিগত খাত দীর্ঘ-মেয়াদি অর্থায়নের চাহিদার জন্য মূলত ব্যাংকের উপর নির্ভরশীল, যা মুদ্রা বাজারের বৈশিষ্ট্যের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং যা পুঁজিবাজারের মাধ্যমে পূরণ করা উচিত। পূঁজিবাজারের উন্নতির জন্য যাতে পুঁজিবাজার হয়ে উঠে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের মূল উৎস, সেজন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এলেক্ষ্যে বন্ড মার্কেটের উন্নয়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং নতুন পণ্য চালু করা হয়েছে যেমন- সুকুক, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডস, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল, প্রাইভেট ইক্যুইটি এবং ইম্পেক্ট ফান্ডস, যা নানাবিধ উপায়ে বিনিয়োগের দরজা খুলে দিবে। এছাড়া অতিসত্বর পুঁজিবাজারে ডিরাইভেটিভ পণ্য নিয়ে আসা হবে, যাতে হেজিংয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় সাহায্য হয়।
জানা গেছে, রোড শো সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধির সাথে চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলাম এর নেতৃত্বে বিএসইসির সাত সদস্যের একটি দল ইউএসএ যাবেন। অনান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান রোড শোতে অংশগ্রহণ করবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক, বিডা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করবেন। এছাড়া ইউএসএতে রোড শো অনুষ্ঠানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহিদুল ইসলামের উপস্থিতিসহ ফেডারেল এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতি বা অন্যান্য প্রয়োজনের ব্যাপারে সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি।