বন্দুক সহিংসতাকে জরুরি দুর্যোগ ঘোষণা করলো নিউইয়র্ক

বন্দুক সহিংসতাকে জরুরি দুর্যোগ ঘোষণা করলো নিউইয়র্ক
বন্দুক সহিংসতাকে জরুরি দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে নিউইয়র্ক। প্রথমবারের মত যুক্তরাষ্ট্রের কোন অঙ্গরাজ্য এ সহিংসতাকে জরুরি দুর্যোগ ঘোষণা করল।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্র ক্যুমো এ ঘোষণা দেন।

স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে বন্দুক হামলা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
একই সঙ্গে বন্দুক সহিংসতা প্রতিরোধে ১৩ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা দেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে শুধু নিউইয়র্কে ৫১টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে, যা গত বছরের তুলনায় ৫৩ দশমিক দুই শতাংশ বেশি। এর আগে করোনা মহামারি আকার ধারণ করলে নিউইয়র্কে জরুরি অবস্থা জারি করেন গভর্নর অ্যান্ড্র ক্যুমো। করোনা প্রতিরোধে তখন নেওয়া পদক্ষেপ প্রশংসা কুড়ায়। এবার বন্দুক সহিংসতা প্রতিরোধেও নানা পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অনেকে।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ করোনা মহামারির মধ্যেও প্রাণঘাতী বন্দুক হামলা আরেক মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিশু থেকে শুরু করে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারাও রক্ষা পাচ্ছেন না এ সহিংসতা থেকে। স্বাধীনতা দিবসের ছুটিতে তিন দিনে দেশজুড়ে পাঁচ শতাধিক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে।

এতে প্রাণ হারান কমপক্ষে ২৩৩ মার্কিন নাগরিক। আর আহত হয়েছেন ৬১৮ জন। তবে সিএনএনের খবরে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরের ছুটির দিনের তুলনায় এবার বন্দুক সহিংসতা ২৬ শতাংশ কমেছে।

গত বছর একই সময়ে দেশটিতে ৩১৪ প্রাণহানি ও ৭৫১ জন আহত হয়েছিলেন। নিউইয়র্কে শুক্রবার থেকে রোববার—এ তিন দিনে ২১টি বন্দুক হামলায় হতাহত হয়েছেন ২৬ জন। অঙ্গরাজ্য পুলিশ বলছে, গত বছরের একই সময়ে ২৫টি হামলায় ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। (৪ জুলাই) নিউইয়র্কে ১২টি বন্দুক হামলায় ১৩ জন আহত হয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। তখন আটটি বন্দুক হামলায় আটজন আহত হয়েছিলেন। সার্বিকভাবে ২০২০ সালের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরে নিউইয়র্কে বন্দুক সহিংসতা ৪০ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরে ৭৬৭ বন্দুক হামলার ভুক্তভোগী ছিলেন ৮৮৫ জন।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকালে গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে সোমবার পর্যন্ত বন্দুক সহিংসতার ঘটনার কথা নথিভুক্ত করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৫তম স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই নাশকতার আশঙ্কা করেছিল নিরাপত্তা বাহিনী। সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আনতে ছিল পূর্বপ্রস্তুতিও। নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় চলে তল্লাশি অভিযান।

স্বাধীনতা দিবসের আগে অস্ত্রসহ আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। রোববারের (৪ জুলাই) জাঁকজমকপূর্ণ আতশবাজির ঝলকানির মধ্যেই দেশটির বিভিন্ন স্থানে বন্দুক সহিংসতায় ঝরেছে বহু তাজা প্রাণ।

শিকাগোর পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, রাজ্যটিতে শুক্রবার ভোর থেকে সোমবার পর্যন্ত ১৮ জন নিহত এবং ১০০ জন আহত হয়েছেন। ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে মারা গেছেন আরও ১৪ জন। তাদের একজন ইলিনয় আর্মি ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য। তার নাম ক্রিস কার্ভিজাল।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল ব্রাড লাইটন বলেন, ইলিনয় ন্যাশনাল গার্ডে নতুন ছিলেন কার্ভিজাল। তাকে পরিবহন ইউনিটে মোতায়েন করা হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি সেনাবাহিনীর মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষ করেন।

এ ছাড়া কয়েক হাজার লোকের একটি ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার সময় এক ব্যক্তির এলোপাতাড়ি গুলিতে দুই শিকাগো পুলিশ আহত হন। যদিও শহরটিতে গত বছরের তুলনায় হামলার সংখ্যা দুই শতাংশ কমেছে।

ভার্জিনিয়ায় অজ্ঞাত বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছে চার শিশু। বন্দুক সহিংসতা আশঙ্কাজনকহার বেড়ে যাওয়ায় এই সময়টাকে ‘চ্যালেঞ্জিং সপ্তাহ’ বলে আখ্যা দিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া