আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ব্যাপ্তি এবং বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রে সপ্তাহব্যাপী ‘রোড শো’ শুরু হয়েছে সোমবার (২৬ জুলাই)। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের ইন্টারকন্টিনেন্টাল বার্কলের বলরুমে এই রোড শো’র উদ্বোধনী পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মেডিকেল ও ট্যুরিজম খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের গরীব মানুষগুলোও ছোট ছোট ব্যবসায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এর ফলে বাংলাদেশ সফলভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো। আমরা খুবই পরিকল্পিত উপায়ে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে থাকি। আমরা এক্ষেত্রে প্রথমই আমাদের লক্ষ্য ঠিক করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌছানোর চেষ্ট করি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তিনি দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে দেশে প্রচুর ছোট বড় কল-কারখানা গড়ে উঠেছে। বিনিয়োগকারীরা প্রচুর লাভবান হচ্ছে। কোন দেশের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা না থাকলে উন্নয়ন ধরা দেয় না। তাই এটিও বাংলাদেশের একটি বড় অর্জন।
সালমান এফ রহমান বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে একমাত্র বাধা হয়ে দাড়াতে পারতো বিদ্যুৎ স্বল্পতা। তাই আমরা সেই সমস্যা চিহ্নিত করেছি এবং সমাধানও করেছি। তাই বাংলাদেশে ব্যবসায়ে এখন কোন সমস্য নেই। আমরা চাহিদামত গ্যাসের সরবরাহও বাড়িয়েছি। এছাড়া এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। ফ্লোটিং টার্মিনাল, মাতববাড়ি প্লান্টসহ আরও অনেক প্রকল্পের কাজ চলছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রাণবন্ত উপাদানগুলো বাংলাদেশে প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। এখন ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে কোন ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (বেপজা) গঠনের ধারণা দেন। এছাড়া একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী প্রাইভেট ইকোনমিক জোনের লাইসেন্স দেন। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) সারা দেশে ১০০ টির উপরে জোন রয়েছে। এদের মধ্যে মিরসরাই ও বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে প্রচুর সুবিধা রয়েছে। এসব এলাকায় ব্যবসায়ের উপযুক্ত সকল সুযোগ একসাথে পাওয়া যায়।
অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কারণ ব্যবসায়ে এই খাতটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করেছেন। এর ফলে পুরো দেশেরই উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রচুর বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। আমার কাছে অনেকেই বাংলাদেশের সফলতার কারণ সম্পর্কে জানতে চায়। তাদেরকে প্রথমেই বলি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এছাড়া আমাদের সফলতার একমাত্র বিষয় হলো বিদ্যুতের প্রচুর যোগান। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক বেশি বিদ্যুত উৎপাদন করা হয়ে থাকে। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানসহ বাসা বাড়িতেও এখন কোন লোডশেডিং হচ্ছে না। এখানকার ৯৯ শতাংশ পরিবার বর্তমানে বিদ্যুতের আওতায় রয়েছে।
একই সময়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বড় একটি সমস্যা জমি রেজিষ্ট্রেশন। এখানে প্রচুর দুর্নীতি হত। তবে বর্তমানে ভূমি মন্ত্রনালয় ও আইন মন্ত্রনালয় এই জমি রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতিকে পুরোপুরি অনলাইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। এর ফলে ভূমি নিয়ে দূর্নীতি কমে এসেছে। এছাড়া বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে এই মহামারির সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে মানুষের ফোনে টাকা পাঠানো হয়েছে। সরকারি কাজে ব্যাবহার করার জন্য সফটওয়্যারগুলোও নিজেদের দেশেই তৈরি করেছি আমরা।
এছাড়াও তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইউনিয়ন পর্যায়েও রয়েছে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট। সেখানে বিনিয়োগ করে লাভ করতে পারছে বলেই ব্যবসা করছে মানুষ। এমনকি ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। এসব এলাকায় বিউটিপার্লার ও ব্যামাগারও রয়েছে। এর থেকেই বোঝা যায় বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারে প্রচুর বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। আমরা চাল রপ্তানি করি। শাকসবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। এছাড়া ফিশারি ও দুগ্ধসহ অনেক কিছুই বাংলাদেশে উৎপাদন করা হয়। প্রতিবছর ঈদুল আজহায় ভারত থেকে প্রচুর গবাদি পশু বাংলাদেশে আনা হত। তবে চলতি বছরের ঈদে কোন গবাদি পশু আসেনি, কারণ আমরাই অনেক গবাদি পশু উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি।