বাকী তিন জন হলেন-ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) বাবলু কুমার সাহা, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান ও ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল হক।
আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে তাদেরকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১১ আগস্ট) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলুরুজ্জামানের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। অ্যাডভোকেট রিপন বড়ৈ এ আবেদনটি করেন। আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ২০১৬ সালে জিএমপি (Good Manufacturing Practice-GMP) অনুসরণ না করে ইন্দো বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসসহ ২০টি কোম্পানি অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন করছে মর্মে অভিযোগ করে তা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট দায়ের করেছিল।
ওই মামলায় আদালত ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট ইন্দো বাংলা ফর্মাসিউটিক্যালসসহ ২০টি ওষুধ কোম্পানির মানহীন ওষুধ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। পাশাপাশি ১৪টি কোম্পানিকে এন্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। পরবর্তীতে মামলার রুল শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালত আংশিক রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন এবং ৫ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে ওই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে জিএমপি অনুসরণের সক্ষমতা অর্জনের পর অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদনের অনুমতি প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ে বিবাদীদেরকে প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করার জন্য বলা হয়েছে, যাতে তারা জিএমপি অনুসরণ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন করতে না পারে।
এসব কোম্পানি গোপনে ওষুধ তৈরি বা বিক্রি করছে কি না এবং কোম্পানিগুলোর সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে প্রতি তিন মাস পর পর আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় রায়ে।
কিন্তু আদালতের ওই নির্দেশনা অমান্য করে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে এবং ওষুধ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা কেউ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে না মর্মে অভিযোগ করে আদালত অবমাননার মামলা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ।
মামলার শুনানিকালে মনজিল মোরসেদ আদালতকে বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিক একটি জীবন রক্ষাকারী মেডিসিন। সে কারণেই আদালত জিএমপি নিশ্চিত না করা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলেছিল।। কিন্তু আদালতের নির্দেশ অমান্য করে উৎপাদন চালিয়ে বাজারে বিক্রির মাধ্যমে অনেক মানুষের ক্ষতি করছে ইন্দো বাংলা ফার্মাসিউাটক্যালস। কিন্ত ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা অন্যরা কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কোম্পানির বিক্রয় ডকুমেন্ট হতেও প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তারা অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন করছে। এর ফলে তারা আদালতের ওপর অশ্রদ্ধা দেখিয়েছেন এবং আদালত অবমাননা করেছেন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’