তাই রাজধানীসহ সারা দেশে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে মাঠে নেমেছেন সশস্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কোথাও কোথাও প্রকাশ্যে আবার কোথাও গোপনে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এদিকে হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ থানায় পণ্যবাহী ট্রাকচালকরা পড়েছেন চরম খাবার সংকটে।
পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে ট্রাকচালকদের খাবার সরবরাহে পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, গরিব-দুঃখীদের জন্য প্রতিনিয়ত ত্রাণ তৎপরতা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে জেলা পুলিশের তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করে বেশকিছু নতুন নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি বলেন, লাইফ লাইন বা সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক চালু রাখা জরুরি। কিন্তু সে অনুযায়ী ট্রাক চলছে না। ট্রাকচালকদের কাছে এর কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, মহাসড়কের আশপাশে কোনো হোটেল খোলা নেই। এ কারণে তারা চরম খাদ্য সংকটে রয়েছে।
‘তাই অন্যদের পাশাপাশি ট্রাকচালকদেরও পুলিশ খাবার সরবরাহ করবে। সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশকে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান বলেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আর্তমানবতায় সেবায় এগিয়ে এসেছে। সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে গরিব-অসহায় মানুষের মধ্যে সারা দেশেই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সাভার, সিলেট, ঘাটাইল এবং বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গরিব-দুঃখীদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।’
আইএসপিআর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম শাম্মী বলেন, দেশব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় সেন্টমার্টিনে শুক্রবার সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা ও খাদ্য সহায়তা প্রদান করে নৌবাহিনী যুদ্ধজাহাজ বঙ্গবন্ধু, নির্ভয় ও নির্মূল। সেন্টমার্টিন দ্বীপের পূর্বপাড়া জামে মসজিদ ঈদগাহ মাঠ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মেরিন পার্কের ৯টি ওয়ার্ডের দুই শতাধিক গরিব, দুস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, চিনি, লবণসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, দুর্যোগের সময় বেশি বিপদে পড়েন সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেণি। লোকলজ্জার ভয়ে তারা সাহায্যের জন্য ত্রাণের লাইনেও দাঁড়াতে পারেন না, আবার অন্যের কাছে নিজের অসহায়ত্বও প্রকাশ করতে পারেন না। সরকারের নির্দেশ ও পুলিশের অনুরোধ মেনে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন এমন পরিবারের প্রতি পুলিশ সহানুভূতিশীল। ডিএমপির কয়েকটি ইউনিট, ঢাকা জেলা ও সিএমপি মধ্যবিত্তের জন্য কয়েকটি সেলফোন নম্বর সরবরাহ করেছে। প্রকৃতপক্ষে বিপদাপন্ন নাগরিকরা এসব নম্বরে ফোন করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবারের কথা বললে পুলিশ তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেবে। এ ক্ষেত্রে যাকে খাবার দেয়া হল তার পরিচয় প্রকাশ করা হবে না।