দেশে করোনা সংক্রমণের পর সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় সরকার এসএমই ফাউন্ডেশনকে মোট ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। যার মধ্যে সদ্য বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা বিতরণ করে প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য আরও ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ২২ আগস্ট অর্থ বিভাগ এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে এ বরাদ্দ দিয়েছে। বিতরণ করা ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) উদ্যোক্তাদের ১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল। এবার ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৭৫ লাখ থেকে কমিয়ে ৬০ বা ৬৫ লাখ টাকার মধ্যে বেঁধে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। যদিও ঋণের সুদের হার আগের মতোই ৪ শতাংশ থাকবে। দুই বছরে ২৪ কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা।
এবিষয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমরা চাই বেশিসংখ্যক ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাকে প্রণোদনার টাকা দিতে। এতে ঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৭৫ লাখ টাকা থেকে কিছুটা কমানো হবে। তবে ঋণের সুদের হার আগের মতোই থাকবে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
এসএমই ফাউন্ডেশন বলছে, ১০০ কোটি টাকা বিতরণ করতে গিয়ে দেখা গেছে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তা ব্যাংকে আবেদন করেও প্রণোদনা পাননি। আবার অনেক উদ্যোক্তা যত টাকার জন্য আবেদন করেছেন, তার অর্ধেক পেয়েছেন। বিদায়ী অর্থবছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের দিক থেকে ঋণের চাহিদা ছিল প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৪ জন উদ্যোক্তাকে মোট ১০০ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়। ১ হাজার ৯৫৬ জন আবেদন করেও ঋণ পাননি। তাই এ বছর যাতে বেশিসংখ্যক ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তা ঋণ পান, সে জন্য ঋণের সীমা কমানো হবে।
জানা গেছে, ঋণের টাকা বিতরণ করতে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আগামী রোববার বৈঠক করতে যাচ্ছে এসএমই ফাউন্ডেশন। এরপর বৈঠক হবে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। এ ঋণের জন্য উদ্যোক্তাদের ঢাকায় আসতে হবে না। নিজ জেলায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে ঋণের টাকা তুলতে পারবেন। এই ঋণ নিতে জামানতের প্রয়োজন হবে না। এসএমই ফাউন্ডেশনের সুপারিশেই ঋণ মিলবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী, প্রান্তিক উদ্যোক্তা, নারী উদ্যোক্তা, নতুন উদ্যোক্তা এবং গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের এই ঋণ দেওয়া হবে।