অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিলেও কট্টরপন্থি তালেবান নেতাদের নিয়ে আফগানিস্তানে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপ্রধানসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন কট্টরপন্থীরা এবং সরকারে কোনো নারী নেই।
বিবিসি জানিয়েছে, বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার আগে কিছু নারীকে মারধর করা হয়। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওই বিক্ষোভ সমাবেশ নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে তাদের বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে মারধর ও আটক করা হয়েছে।
এসব অভিযোগ নিয়ে তালেবানের বক্তব্য চেয়েও মেলেনি। তবে তালেবান এসব বিক্ষোভকে বেআইনি ঘোষণা করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে সমাবেশের অনুমতি নিতে হবে এবং তারা যেসব অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করছে তা করা যাবে না।
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আফগান নারীরা বাইরে কাজের অধিকার এবং সরকারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবি জানিয়ে কাবুলসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করে আসলেও তালেবান বলছে, নারী সরকারে থাকবে কিন্তু মন্ত্রী হতে পারবে না।
জাতীয় ক্রিকেট দলসহ আফগানিস্তানে নারীদের সব ধরনের খেলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে এবং তালেবান সরকারের অধীনে নারীরা কোনো খেলায় অংশ নিতে পারবেন না বলে বুধবার জানিয়েছেন কট্টর ইসলামপন্থি তালেবান সরকারের এক কর্মকর্তা।
সরকার গঠনের পর তালেবানের প্রধান ও সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাও বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘আমি দেশবাসীকে এটা নিশ্চিত করতে চাই যে ইসলামিক আইন ও শরিয়া আইন বাস্তবায়নে এ সরকার কঠোর পরিশ্রম করে যাবে।’
বিবৃতিতে আখুন্দজাদা আরও বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে আফগানিস্তানের সব কর্মকাণ্ডই পরিচালিত হবে শরিয়া আইন অনুসারে। তালেবানের নতুন অন্তর্বর্তাকালীন সরকার আফগানিস্তানে দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি, অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, তালেবানরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে ‘শক্তিশালী ও সুস্থ’ সম্পর্ক চায় এবং যতক্ষণ না তারা ‘ইসলামি আইন এবং দেশের জাতীয় মূল্যবোধের’ সাথে সাংঘর্ষিক না হয় ততক্ষণ তারা আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিগুলোকে সম্মান করবে।
তালেবানের নিষ্ঠুর শাসনের ভয় তৈরি হয়েছে আফগানিস্তানজুড়ে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের শাসনামলে নারীদের শিক্ষা ও চাকরির অধিকার ছিল না। তারা পুরুষসঙ্গী ছাড়া একা বাড়ি থেকে বের হতে পারতেন না।
এ কারণেই গত ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নেওয়ার পর থেকেই ব্যাপকভাবে এই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে যে, আবারও হয়তো আফগানিস্তানের নারী ও মেয়েরা শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।