বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) তিন দেশ সফর শেষে দেশে ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আফগান ইস্যুতে সবাই আমাদের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে। বিবিসি জানতে চেয়েছে, ভারত বা পাকিস্তান যেটা করবে, সেটা করব কি না? আমরা বলেছি, অন্যরা কে কী করলো, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের নিজ দেশের ওয়েলফেয়ার আছে। আমাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত আমরা নেব। আফগানিস্তান আমাদের সার্কের সদস্য। তাদের সঙ্গে আমাদের কিছু সম্পর্কও আছে, ঐতিহাসিক সম্পর্ক।’
যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডসের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আফগান ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ড. মোমেন বলেন, ‘আফগান ইস্যুতে আমরা এখন পর্যবেক্ষণে আছি। তারা বলেছে, নতুন সরকারকে আমরা স্বীকৃতি দেব কি না? আমরা বলেছি, তাদের অবস্থা, নীতি, প্রজেক্টস দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমরাও চাই, আফগানিস্তানের উন্নতি হোক। আমরা বিশ্বাস করি গণতন্ত্রে। বৃহত্তর জনগণের ইচ্ছায় যদি সরকার গঠন হয়, আমরা সেটাকে অনুপ্রাণিত করব। আমরা সেটাকে স্বাগত জানাব। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মোটামুটি আমাদের যারা ওখানে ছিল, তারা বের হয়ে আসছে। কিন্তু গত তালেবান সরকারের আমলে আমাদের দেশের কিছু লোক ওখানে গিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের নীতি—জিরো টলারেন্স। আমরা কোনোভাবে কোনো সন্ত্রাসীকে প্রশ্রয় দেব না।’
আফগান ইস্যুতে লন্ডন কিংবা হেগের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের তথা এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘কেউ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেনি।’
যুক্তরাজ্য ও নেদারল্যান্ডস আফগানদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে জোট করবে, উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ‘ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস বলেছে, তারা কয়েকটি দেশ মিলে জোট গঠন করবে। আমি বলেছি, রোহিঙ্গাদের তো আপনারা নেননি। ১১ লাখ রোহিঙ্গা পড়ে আছে। ভালো সংবাদ হচ্ছে, তারা রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।’
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপি নেতা তারেক রহমান ও যুদ্ধাপরাধীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আইনগত দিক। এটা নিয়ে আমার কাছে কোনো অগ্রগতি নেই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ তাদের বার্ষিক মানবাধিকার রিপোর্টে বাংলাদেশ নিয়ে তথ্য দেয়, সেটা অপরিপক্ক। এই ধরনের রিপোর্ট দুঃখজনক। আমাদের আহ্বান, তারা যেন সঠিক তথ্য প্রকাশ করে।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশিদের বাদ দেওয়ার জন্য আমরা তাদের অনুরোধ করেছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা এখন বিদেশে অ্যাপয়েনমেন্ট পাই। যে দেশের কাছেই অ্যাপয়েনমেন্ট চাই, আমরা পাই। আমাদের মান-মর্যাদা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই আমাদের মান-মর্যাদা বেড়েছে।’
উল্লেখ্য, ইউরোপের তিন দেশে ১০ দিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় ফিরেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।