নিউইয়র্ক সিটির কর্মকর্তারা জাতিসংঘকে জানিয়েছেন, সাধারণ পরিষদের হলে প্রবেশের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ প্রাঙ্গণে প্রবেশকারীদের অবশ্যই টিকা নেওয়ার প্রমাণ দেখাতে হবে। এটিই শহরের নিয়ম।
তবে জাতিসংঘের নিয়ম বলছে ভিন্ন কথা। সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আমরা কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে বলতে পারি না যে, টিকা নেওয়া না থাকলে তিনি জাতিসংঘে প্রবেশ করতে পারবেন না।
ম্যানহাটনে অবস্থিত জাতিসংঘের সদরদপ্তরটি আন্তর্জাতিক ভূমি হিসেবে স্বীকৃত। ফলে সেখানে মার্কিন আইনের বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য নয়। তবে মহামারি প্রশ্নে আগেই স্থানীয় ও জাতীয় নির্দেশনা মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন জাতিসংঘ কর্মকর্তারা।
গুতেরেস বলেছেন, আমাদের টিকা নেওয়া লোক সবচেয়ে বেশি কীভাবে নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে শহর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। নিউইয়র্ক মেয়রের কার্যালয় আমাদের টিকা দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে। তাই আগত লোকজন (জাতিসংঘেই) টিকা নিতে পারবেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মতে, আগত কূটনীতিকদের কতজন টিকাগ্রহীতা হতে পারেন, তা বিশ্বজুড়ে টিকা বিতরণে অসমতার একটি প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠতে পারে। যদিও তিনি আশা করছেন, নিউইয়র্কে যাওয়া বেশিরভাগ প্রতিনিধিই টিকা নেওয়া থাকবেন। বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৫৭০ কোটি ডোজ টিকা বিতরণ করা হয়েছে। এর বেশিরভাগই পেয়েছে পশ্চিমা ও ধনী দেশগুলো। বিতরণ হওয়া টিকার মাত্র দুই শতাংশ পেয়েছে আফ্রিকা।
নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডে ব্লাসিও জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বাইরে করোনা টেস্ট ও জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখবে শহর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া, জাতিসংঘে টিকাগ্রহণের প্রমাণপত্র রাখার পক্ষে মত দেওয়ায় সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লা শহিদকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সিটি মেয়র।
তবে জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, সাধারণ পরিষদে প্রবেশের জন্য টিকাগ্রহণের প্রমাণ দেখানোর নিয়মে আপত্তি রয়েছে মস্কোর। এটিকে বৈষম্যমূলক বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গত বছর করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সশরীরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে অংশ নেননি বিশ্বনেতা ও কূটনীতিকরা। এর পরিবর্তে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভিডিওবার্তা দিয়েছিলেন তারা।