এবিষয়ে ওয়ালটন ডিজি-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’ প্রকল্পের পরিচালক। গত ২ সেপ্টেম্বর ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এ বিষয়ে একটি চিঠির মাধ্যমে এ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে ওয়ালটনের এ জালিয়াতিকে প্রতারণামূলক কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডিএমডি মো. লিয়াকত আলী অর্থসংবাদ’কে বলেন, আমরা চিঠির মাধ্যমে আমাদের ব্যাখ্যা দিয়েছি। ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন বলে মুঠোফোন রেখে দেন।
ওই চিঠির তথ্য মতে, ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’ প্রকল্পের আওতায় ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাবলেট ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র (টেন্ডার) আহ্বান করা হয়। ওয়ালটন ডিজি-টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পক্ষে দরপত্র দাখিল করেন প্রতিষ্ঠানটির ডিএমডি মো. লিয়াকত আলী। তবে ওয়ালটন ডিজি-টেকের দাখিল করা এসব কাগজপত্র ও নমুনা ট্যাবলেটে অসামঞ্জস্যতা ধরা পড়ে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- চুক্তিতে এক মডেলের ট্যাবলেট দেওয়ার কথা থাকলেও ট্যাবলেটগুলোর ব্র্যান্ড ও মডেলে ত্রুটি ধরা পড়ে। একই সঙ্গে ওয়ালটন প্লাজা ও ওয়ালটন ডিজি-হাইটেকের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর ও কার্যাদেশের তারিখেও অসামঞ্জস্যতা পাওয়া যায়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির ডিএমডি মো. লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে ট্যাবলেট ক্রয় প্রক্রিয়া চলাকালীন সরকারি কার্যক্রমকে প্রভাবিত করেছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ এর প্রকল্প পরিচালক কবির উদ্দিন আহাম্মদ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’ প্রকল্পের আওতায় ট্যাবলেট ক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রমে ই-জিপি টেন্ডারের (আইডি: ৫৯০৬৬৫) মাধ্যমে তিন লাখ ৯৫ হাজার ট্যাবলেট ক্রয়ের জন্য ইজিপি পদ্ধতিতে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী ওয়ালটন ব্র্যান্ড ‘ওয়ালপ্যাড ৮জি’ সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্পে দেয়া নমুনা ট্যাবের স্ক্রিনে ওয়ালটন লেখা থাকলেও ট্যাব ওপেন করার পর সিস্টেমে ব্র্যান্ডের নাম এএলপিএস দেখা যায়। ওয়ালটন প্লাজা ও ওয়ালটন ডিজি-হাইটেকের মধ্যে চুক্তির তারিখেও পার্থক্য পাওয়া গেছে।
ওয়ালটনের এসব কার্যকলাপ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কাছে পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ১২৭(২) মোতাবেক প্রতারণামূলক কাজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর মতে, সরকারি ক্রয় কার্যক্রমের দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে জাল ডকুমেন্ট ও নমুনা ট্যাবলেট দাখিল পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ১২৭ (২) (খ) ও ১২৭ (২) (ঘ) মতে প্রতারণা ও কার্যক্রমের ফলাফলকে প্রভাবিত করার শামিল। এসব প্রতারণা ও জবরদস্তিমূলক কার্য হিসেবে উল্লেখিত বিধিমালার ১২৭ (৪) বিধিমতে কেন ওয়ালটনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছে পরিসংখ্যান ব্যুরো। একই সঙ্গে চিঠি পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে ওয়ালটনকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।