কঠোরতা আর মানবতার এমন দৃষ্টান্ত রাখছেন র্যাব-১১ এর সিও থেকে সাধারণ সদস্য পর্যন্ত সবাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে র্যাবের এমন কার্যক্রম বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, র্যাবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও কাঁধে চাল-ডালের বস্তা নিয়ে যাচ্ছেন মানুষের বাড়ি বাড়ি।
নগরীর সানারপাড় এলাকার বাসিন্দারা ঘটনার বর্ননা দিয়ে বলেন, ‘রাত তখন প্রায় ১২টা। মহল্লার রাস্তায় ২টি র্যাবের গাড়ি এসে থামল। আমরা প্রথমে মনে করেছিলাম, বাইরে কেউ ঘোরাফেরা করছে কিনা তা দেখতে নিয়মিত টহলের অংশ। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই দেখতে পেলাম বস্তা বস্তা সামগ্রী কাধে নিয়ে হেটে মহল্লায় প্রবেশ করছেন র্যাব সদস্যরা।’
ওই এলাকার রমিজ উদ্দিন বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে দরজায় কড়া নেড়ে আওয়াজ আসলো, বাবা খোলেন, খাবার এনেছি, আমরা র্যাব। দরজা খুলেই অবাক হলাম, র্যাবের সদস্যদের কাধে খাদ্য সামগ্রীর বস্তা। দূর থেকেই বস্তাটি দরজার সামনে নামিয়ে র্যাবের একজন বললেন, প্রধানমন্ত্রী আপনাদের জন্য খাবার পাঠিয়েছেন। ঘরে মাত্র ৩-৪ দিনের খাবারই অবশিষ্ট ছিল। এমন সময় প্রধানমন্ত্রীর খাবার নিয়ে এসেছে র্যাব। খুশিতে চোখে পানি চলে এল।
পাশের এলাকার বাসিন্দা গার্মেন্টস কর্মী রিজিয়া বেগম বলেন, র্যাবের লোকেরা খাবার দিয়া গেছে, আবার আমার ছোট্ট সন্তান দেখে জিজ্ঞাসা করছে দুধ আছে কিনা। আমি শুধু কেঁদেছি আর দোয়া করেছি।
কথা হয় এক পা নেই পঙ্গু মনির মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, রাস্তার পাশে টঙ দোকান। কিন্তু লকাডাউনের জন্য ২৬ তারিখ থেকে বন্ধ। বাসায় যা ছিল সবাই শেষ। দুইদিন কোনো রকম চিড়া মুড়ি খেয়ে জীবন যাপন করছিলাম। দুধের বাচ্চাটাকেও দুধ খাওয়াতে পারছিলাম না। বাজার থেকে গিয়ে কিনে আনবো সেই টাকাও নেই। বাচ্চাদের থেকে মুখ লুকিয়ে আল্লাহ আল্লাহ করছিলাম। আল্লাহ আমার ডাক শুনেছেন। আমার বাচ্চাদের জন্য র্যাবের মাধ্যমে খাবার পাঠিয়েছেন।
এ ব্যাপারে র্যাবের সিনিয়র এএসপি আলেপ উদ্দিনের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্তব্য পালন করছি মাত্র। আর সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ করছি।