সোমবার (১৩ এপ্রিল) ‘কোভিড-১৯ - সরকার গৃহীত পদক্ষেপসমূহের কার্যকারিতা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও আয় নিরাপত্তা : সিপিডির প্রাথমিক বিশ্লেষণ ও প্রস্তাব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ অভিমত দেন।
গত ১২ এপ্রিল এক পূর্বাভাসে বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে ধস নামতে পারে। এ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ থেকে ৩ শতাংশ।
বিশ্ব ব্যাংকের এই আভাসকে সিপিডি কিভাবে দেখছে, সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এখন জিডিপির যে হিসাবগুলো করা হচ্ছে তা বৈশিক প্রেক্ষাপটে করা হচ্ছে। এটা করা হচ্ছে, এক একটা সিনারিও’র (দৃশ্যপট) ভিত্তিতে। এই সিনারিওগুলো কিন্তু পাল্টাতে থাকবে। সেই সিনারিও’র পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার মধ্যে পড়বে। বলা হচ্ছে, এমন মন্দা হবে যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হয়নি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে তার ভিত্তিতে তারা (বিশ্ব ব্যাংক) হিসাবটা করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকার যে প্রণোদনাগুলো দিয়েছে, তার উদ্দেশ্য- অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা, চাহিদাকে চাঙ্গা রাখা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখা, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখা এবং বাজারে সরবরাহ সচল রাখা। যাতে উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার মাধ্যমে বাজারে জিনিসপত্র থাকে এবং বাজারের জিনিসপত্র যেন মানুষ কিনতে পারে। প্রণোদনা কিন্তু এজন্যই দেয়া হয়।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, পৃথিবীর অনেকে দেশে কিন্তু জিডিপির ১১-১২ শতাংশ, এমনকি ১৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা দেয়া হয়েছে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য। সুতরাং আমরা মনে করি সরকার যে প্রণোদনাগুলো দিয়েছে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হলে অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব দেখতে পারবো।
এ বিষয়ে সিপিডির অনারারি ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাস আঘাত আসার আগেই বাংলাদেশের অর্থনীতি একটা দুর্বল জায়গায় ছিল। রেমিট্যান্স ছাড়া সব সূচকই ছিল নিম্নমুখী। সে রকম পরিস্থিতিতেই করোনাভাইরাস আঘাত এসেছে। সুতরাং তুলনামূলক দুর্বল অবস্থানে থেকেই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এই আঘাতটা সহ্য করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির বড় শক্তির জায়গা ৮০-৮৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণ চাহিদার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এজন্য আমরা যে প্যাকেজটির কথা বলেছি, এর মাধ্যমে চাহিদাকে চাঙ্গা করতে পারবো এবং এটার মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবো। যেহেতু অভ্যন্তরীণ চাহিদার ওপরে আমাদের অর্থনীতি বেশি নির্ভরশীল, সুতরাং এগুলো করতে পারলে অন্যান্য অনেক দেশের থেকে আমাদের এখানে সার্থক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সুতরাং আমরা ধকল কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে মনে করি, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।