মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। মাত্র ১৮ বছর বয়সে শহিদ হওয়া হামিদুর রহমান বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্তদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।
১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের শেষদিকে কমলগঞ্জের দলই সীমান্ত এলাকায় প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছিলো। চারদিকে চা-বাগান, মাঝখানে দলই সীমান্ত চৌকি। চৌকি থেকে দক্ষিণ-পূর্বদিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর শহরে ছিল মুক্তিবাহিনীর সাবসেক্টর ক্যাম্প।
হামিদুর রহমান প্রথম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সি-কোম্পানির হয়ে দলই সীমান্তের ফাঁড়ি দখল করার অভিযানে অংশ নেন। হামিদুর রহমানের বীরত্বে শত্রুবাহিনীকে পরাস্ত করে মুক্তিবাহিনী সীমানা ফাঁড়িটি দখল করতে সমর্থ হলেও বিজয়ের স্বাদ আস্বাদন করতে পারেননি তিনি। গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীন হন হামিদুর রহমান।
তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে সীমান্তের কাছে দাফন করা হয়। পরে ২০০৭ সালের ১০ ডিসেম্বর ত্রিপুরা থেকে তার মরদেহ এনে গ্রামের বাড়িতে পুনরায় দাফন করা হয়।
প্রতি বছর ২৮ অক্টোবর কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ডের উদ্যোগে দলই সীমান্তে বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি ১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আক্কাস আলী ও মা মোছা. কায়মুন্নেসা।
সেনাবাহিনীর সিপাহি পদে ১৯৭০ সালে যোগ দেন হামিদুর রহমান। পরের বছরের অক্টোবরে তিনি প্রথম ইস্টবেঙ্গল সি কোম্পানির হয়ে ধলই সীমান্তের ফাঁড়ি দখল অভিযানে অংশ নেন।