বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ও লাফার্জ হোলসিমের সঙ্গে যেন বেক্সিমকো-গ্রামীণফোনের যুদ্ধ চলেছে। আইসিবির শেয়ারদর সূচক টেনে নামাতে চাইলেও বেক্সিমকো-গ্রামীণফোনের চেষ্টা সেটি হতে দেয়নি।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট। এর আগের দুইদিনে সূচকটিতে যোগ হয়েছিল ১৮২ পয়েন্ট। এর মধ্যে গতকালের বড় উত্থানের দিনেই বেড়েছে ১১৪ পয়েন্ট। বর্তমানে সূচকটি ৬ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে বাচাই করা কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ‘ডিএসই ৩০’ এদিন ২০ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে শরীয়াহ ভিত্তিক কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ‘ডিএসই এস’ কমেছে। আজ লেনদেন শেষে সূচকটি হারিয়েছে ১ পয়েন্ট।
সূচকের টানা তৃতীয় দিনের উত্থানে বড় অবদান ছিল বেক্সিমকো ও গ্রামীণফোনের শেয়ারের। বেক্সিমকোর কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ২২৪ পয়েন্ট। আর গ্রামীণফোনের শেয়ার যোগ করেছে আরও ২১২ পয়েন্ট।
এছাড়াও রবি, ওয়ালটন হাই-টেক, জেনেক্স ইনফোসিস, আইএফআইসি ব্যাংক, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, ট্রাস্ট ব্যাংক, রেনেটা ও ইউসিবির কারণে সূচকে যোগ হয় ৩২৭ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট। ১০ কোম্পানি মিলে সমন্বিতভাবে সূচকে যোগ করেছে ৭৬৪ পয়েন্ট।
বেক্সিমকো-গ্রামীণফোনের সূচক টেনে তোলার চেষ্টাকে ব্যাহত করতে চেয়েছিল আইসিবি ও লাফার্জ হোলসিমের শেয়ার। এ দুই কোম্পানি আজ বড় উত্থানের বাধা ছিল।
বেক্সিমকো-গ্রামীণফোনের সঙ্গে পেরে না উঠলেও আইসিবি-লাফার্জ হোলসিমের শেয়ারের দরপতনের কারণে সূচক কমেছে ৩২০ পয়েন্টের বেশি।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, পাওয়ার গ্রিড, অলিম্পিক, ওরিয়ন ফার্মা, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, এনআরবিসি ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ও ইস্টার্ন ব্যাংকের কারণে সূচক হারিয়েছে আরও ৩১২ পয়েন্ট। ১০ কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৬৩৩ পয়েন্ট।
টানা তিনদিনের উত্থানের সঙ্গে শেয়ারবাজারে ছন্দ ফিরিয়ে এনেছে লেনদেন। সূচকের মতো টাকার অংকে লেনদেনও আগের দিনের তুলনায় আজ বেড়েছে, লেনদেন হয়েছে চলতি মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিন ডিএসইতে ১ হাজার ৫০৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। গতকাল লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার।
[caption id="attachment_90021" align="aligncenter" width="1409"] বৃহস্পতিবার ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার পাঁচ কোম্পানি[/caption]
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ডিএসইতে ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৫টি শেয়ারের। কমেছে ২০৮টির। বাকি ৫০টি কোম্পানির শেয়ারদর আজ অপরিবর্তিত ছিল।
শতাধিক কোম্পানির দরবৃদ্ধির দিনে তিনটির শেয়ারদর যতটুকু বাড়া সম্ভব ততটুকু বেড়েছে। আজ ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। কোম্পানিটি বৃহস্পতিবার ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে রয়েছে।
সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ। আর শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ারদর এদিন ৯ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়েছে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকায় এ তিন কোম্পানি ছাড়া আরও রয়েছে- জেনেক্স ইনফোসিস, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, স্যালভো কেমিক্যাল, জেমিনি সি ফুড, সোনালি আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ, বেক্সিমকো এবং তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স।
বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতনের দিন সবচেয়ে বেশি দর কমেছে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের। আজ কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ কমেছে।
এছাড়াও গোল্ডেন সনের ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ, হামিদ ফেব্রিক্সের ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ, মোজাফফর হোসাইন স্পিনিং মিলের ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ, আইসিবির ৫ দশমিক ০৫ শতাংশ, তুংহাই নিটিংয়ের ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ, ডেল্টা স্পিনিংয়ের৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, মুন্নু ফেব্রিকসের ৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ন্যাশনাল হাউজিংয়ের ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ ও ওয়েস্টার্ন মেরিনের শেয়ারদর ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ কমেছে।
প্রধান বাজারের মতো অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সিএসই সার্বিক সূচক ৭৮ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি ২০ হাজার ৫১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আজ সিএসইতে ৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।