নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী আজ (মঙ্গলবার) বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির সঙ্গে বৈঠকে বসেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে বিনিয়োগকারীদের মনোবল আরও চাঙা হয়েছে। যার ফলে সূচকের বড় উত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক আবারও সাত হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। একই সঙ্গে লেনদেনেও কিছুটা গতি ফিরেছে। আগের দিনের তুলনায় দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে আজ লেনদেন বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৪শ’ টাকা।
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ‘ডিএসই এক্স’ আগের দিনের তুলনায় ৭০ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি ৭ হাজার ৪৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো প্রধান সূচক ৭ হাজার পয়েন্টের মাইফলক স্পর্শ করেছিল। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর শতাধিক পয়েন্টের পতনে সূচকটি সাত হাজারের নিচে নেমে আসে। পরের দিন অবশ্য বড় উত্থান ‘ডিএসই এক্স’ কে পুণরায় সাত হাজারের উপরে তোলে। নভেম্বরের প্রথম দিন (১ নভেম্বর) সূচকটি পুণরায় ৬ হাজার ৯৯৮ পয়েন্টে নেমে আসে। ওই মাসে আর সাত হাজার পয়েন্ট স্পর্শ করতে পারেনি ‘ডিএসই এক্স’। গত কয়েকদিনের ধারাবাহিক উত্থানের পর অবশেষে আজ সূচকটি আবারও ৭ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে।
প্রধান সূচকের সঙ্গে ডিএসইর অপর দুই সূচকেরও আজ উত্থান হয়েছে। শরীয়াহ ভিত্তিক কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ‘ডিএসই এস’ আজ ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। আর বাছাই করা কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ‘ডিএসই ৩০’ বেড়েছে ২৫ পয়েন্ট।
সূচকের উত্থানে বড় অবদান রেখেছে বেক্সিমকো। কোম্পানিটির কারণে আজ ডিএসইর সূচকে সাড়ে ৫ পয়েন্টের বেশি যোগ হয়েছে।
লাফার্জ হোলসিম, ইউনাইটেড পাওয়ার গ্রিড, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এবং বেক্সিমকো ফার্মার কারণে সূচক বেড়েছে আরও ১৬ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট।
আর গ্রামীণফোন, বার্জার পেইন্টস, ওয়ান ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের কারণে সূচকে আর ৭ দশমিক ০৫ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। এ ১০ কোম্পানি মিলে সূচকে যোগ করেছে ২৯ দশমিক ০৮ পয়েন্ট।
সব সূচকের উত্থানের দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে টাকার অংকে লেনদেনও বেড়েছে। আজ ডিএসইতে ১ হাজার ৩৩১ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এটি গত ১১ কর্মদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন।
সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে ৩৭৫টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এসব কোম্পানির মধ্যে ২৭৪টি কোম্পানির শেয়ারদরই এদিন বেড়েছে। কমেছে ৬৯টির। বাকি ৩২টি কোম্পানির শেয়ারদর এদিন অপরিবর্তিত ছিল।
দুই শতাধিক কোম্পানির দরবৃদ্ধির দিন ১৯ কোম্পানির শেয়ারদর একদিনে যতটুকু বৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব ততটুকুই বেড়েছে। এর মধ্যে খান ব্রাদার্সের শেয়ারদর ১০ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানিটি আজ ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে।
ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ, ফু-ওয়াং ফুডের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, অ্যাপোলো ইস্পাত ও ডেল্টা স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ফাইন ফুডস ও জিপিএস ফাইন্যান্সের ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ, অলিম্পিক এক্সেসোরিজের ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ইয়াকিন পলিমারের শেয়ারদর ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে।
মঙ্গলবার ডিএসইর টপটেন লুজার তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলো হল- আমান ফিড, এশিয়ান ইন্স্যুরেন্স, জিবিবি পাওয়ার, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, ফরচুন সুজ, ওরিয়ন ইনফিউশন, সোনালী পেপার, দেশ গার্মেন্টস্, শাইনপুকুর সিরামিকস ও স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স।
প্রধান শেয়ারবাজারের মতো অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসই সার্বিক সূচক ২০০ পয়েন্ট বেড়ে বর্তমানে ২০ হাজার ৬০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আজ সিএসইতে ৪৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেণদেন হয়েছে।