আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের ৬২টি জেলায় সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বিদেশ ফেরত নাগরিকদের শতভাগ কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এর পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ বিতরণে সহযোগিতা, জীবাণুনাশক ছিটানো, যানবাহন নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করছে।
বর্তমানে ভয়াবহ করোনাভাইরাস তথা কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ঘরে অবস্থানের নির্দেশনা পালিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ২৬ মার্চ হতে অফিস-আদালত, কল- কারখানা এবং স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গণপরিবহনের চলাচল। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষ করে খেটে খাওয়া দিনমজুর এবং প্রান্তিক জনগণ যাতে খাদ্যসংকটে না পড়ে, সে উদ্দেশে সরকার এরই মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় দূর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি নিয়েছে।
এদিকে, এর ধারাবাহিকতায় বান্দরবান পার্বত্য জেলাতেও সরকারের ত্রাণ সামগ্রী এসে পৌঁছায়। কিন্তু, বান্দরবান জেলার রুমা ও থানচি উপজেলার কতিপয় ইউনিয়ন দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় এবং সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় সরকারি সমস্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছিল না।
জানা গেছে, বান্দরবান জেলা প্রশাসন এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ওই সমস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য বান্দরবান সেনা রিজিয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিকট সহযোগিতা কামনা করে। এমতাবস্থায়, বরাবরের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের (চট্টগ্রাম সেনানিবাস) সার্বিক সহযোগিতা ও তত্বাবধানে “আর্মি এভিয়েশন”-এর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন দূর্গম এলাকায় ৩৬০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারের কাছে ৩,৭২০ কেজি ওজনের বিভিন্ন প্রকার ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়।
এ ব্যাপারে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি যে কোন দূর্যোগ মোকাবিলা, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তাসহ সকল প্রকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’