আর এর মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালের শেষপ্রান্তে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে প্রথমবারের মতো কোনো দেশে আক্রান্ত ১০ লাখ ছাড়াল। যুক্তরাষ্ট্র এর আগে প্রথম দেশ হিসেবে করোনায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর তালিকায় নিজেদের নাম লেখায়। যার ধারেকাছেও কেউ নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ১৮ দিনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হলো। অর্থাৎ আজ থেকে ১৮ দিন আগে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখের বেশি। দেশটির মোট আক্রান্তের মধ্যে যা ৩০ শতাংশ। জনবহুল নিইউয়র্কে করোনায় মারা গেছে প্রায় ২৩ হাজার।
আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে নিউইয়র্কের পর যথাক্রমে রয়েছে নিউ জার্সি, ম্যাসাচুসেটস, ক্যালিফোর্নিয়া ও পেনিসেলভেনিয়া অঙ্গরাজ্য। নিউ জার্সিতে আক্রান্ত ১ লাখ ১৪ হাজারের মধ্যে ৬ হাজার ৪০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ম্যাসাচুসেটসে আক্রান্ত ৫৬ হাজারের মধ্যে ৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।
এমন অবস্থার পরও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশের অর্থনীতি পুনরায় চালু করার জন্য তোড়জোর শুরু করে দিয়েছেন। সোমবার তিনি হোয়াইট হাউসে করোনা পরিস্থিতি নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজ্য পর্যায়ের নেতাদের স্কুল চালু করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। লকডাউন বিরোধীদের প্রকাশ্যে সমর্থন দিতে দেখা যাচ্ছে তাকে।
গত পাঁচ সপ্তাহে ২ কোটি ৬০ লাখ মার্কিনি চাকরি হারিয়েছেন। বেকার থাকায় সরকার কর্তৃক প্রদেয় সুবিধা পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন করেছেন তারা। ১৯৩০ সালে মহামন্দার পর দেশটিতে এত মানুষের বেকার হওয়ার নজির নেই। কেন্দ্রীয় সরকার ২ ট্রিলিয়নের বেশি ডলারের প্রণোদনা দিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না।
ট্রাম্প সোমবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, দেশের অর্থনীতি পুনরায় চালুর দিকে ‘বুবুক্ষু হয়ে তাকিয়ে রয়েছে দেশের মানুষ’। তবে এই অবস্থায় দেশটিতে যদি সব কিছু পুনরায় খুলে দেওয়া হয় তাহলে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে বাড়তে শুরু করবে বলে আগাম সতর্কতা করে দিয়েছেন বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা।
গত ২৩ এপ্রিল মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস একটি জরিপ প্রকাশ করেছে। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের ৭০ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন, মহামারি করোনা প্রতিরোধ করতে হলে লকডাউন অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। তা না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। অপরদিকে ৩০ শতাংশ মার্কিনির মত অর্থনীতি বাঁচাতে হলে লকডাউন তুলে নিয়ে কাজে ফেরাতে হবে মানুষকে।