ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে (সিএমএসএফ) অর্থ ও শেয়ার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমা না হওয়ায় ফান্ডের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ম্যানেজমেন্ট কমিটি (এএএমসি) ইস্যুয়ার কোম্পানিদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
নিরপেক্ষ অডিট কমিটির এক সভায় কমিটির প্রধান মো. আবদুর রউফ বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দীর্ঘদিনের অবণ্টিত লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার এ ফান্ডে আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ৪৬০ কোটি টাকা এবং বর্তমান মার্কেট ভ্যালুতে ৩৩৮ কোটি টাকার সমপরিমাণ শেয়ার এই ফান্ডে জমা হয়েছে যা খুবই নগণ্য।
তিনি বলেন, আগামী ৩১ মে পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ইস্যুয়ার কোম্পানিসমূহ সিএসএফের ফান্ডে অর্থ ও শেয়ার ট্রানস্ফার না করলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিয়ম অনুযায়ী যে অর্থ ও শেয়ার এই ফান্ডে আসার কথা তা কীভাবে আনা যায় সে বিষয়ে মনিটরিংসহ সার্বিক তত্ত্বাবধান করা হবে।
অডিট কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দীর্ঘদিনের অবণ্ঠিত লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। এই অর্থ একসঙ্গে করে বাজারের উন্নয়নে কাজে লাগাতে বিএসইসি ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ নামে বিশেষ এই তহবিল গঠন করেছে। সেই সঙ্গে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১ গ্রেজেট আকারে প্রকাশ করে।
ফান্ডটির রুলস অনুসারে তা পরিচালনার জন্য ১০ সদস্যের একটি শক্তিশালী কমিটি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বর্তমানে এই ফান্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশে দেশের সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির মাধ্যমে স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতেই এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। বাজার স্থিতিশীলতায় সিএমএসএফ “আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড” নামে একটি ক্লোজড-অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ড গঠন করেছে। এই ফান্ডের আকার ১০০ কোটি টাকা, যার ইউনিট প্রতি অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। সিএমএসএফ স্পন্সর হিসেবে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
এ ছাড়া বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পত্তি এই ফান্ডের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। সিএমএসএফ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে মোট ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮০ টাকার অমীমাংসিত দাবি নিষ্পত্তির আবেদন গ্রহণ করেছে এবং ইতোমধ্যে ২১ লাখ ৩৩ হাজার ২২৬ টাকার দাবি নিষ্পত্তি করেছে যা মোট দাবির ৯৩ শতাংশ।
সিএমএসএফ চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমরা পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় কাজ করছি এবং সঙ্গে ক্যাডার এবং বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থ নিশ্চিত করার নিমিত্তে যথাযথ যাচাইসাপেক্ষে অবিলম্বে দাবি নিষ্পত্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস রাখি, সিএমএসএফের কার্যক্রমের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।