জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২০৫ রান। বাংলাদেশের চেয়ে ১৩৭ রানে এগিয়ে গেছে তারা। শেষ সেশনে খেলা হবে আর ৩৫ ওভার।
এর মধ্যেই লঙ্কানদের অলআউট করে আবার সেই লক্ষ্য তাড়া করে জিততে হবে বাংলাদেশকে। তাই স্বাগতিকদের হারার সম্ভাবনা শেষ হওয়ার পাশাপাশি জেতারও কোন আশা বাকি নেই বললেই চলে।
আজ দিনের দুই সেশনেই দুইটি করে উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম সেশনে ২৬.৫ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে তারা তোলে ৮৯ রান। এবার মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে চা পানের বিরতি পর্যন্ত ২৯ ওভার থেকে নিয়েছে ৭৭ রান। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১৬.৪ ওভারে ৪৪ রান নিয়েছেন চান্দিমাল ও ডিকভেলা।
চতুর্থ দিন বিকেলে ১৭.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৯ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের চেয়ে তারা পিছিয়ে ছিল ২৯ রানে। আজ সকালে খেলতে নেমে এই ২৯ রান করতে মোটে ৪ ওভার লাগে লঙ্কানদের। দিনের শুরুতেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন কুশল।
দিনের প্রথম ওভারেই তাইজুলকে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান এ ডানহারি মিডল অর্ডার। দুই ওভার পর খালেদ আহমেদ হজম করেন হ্যাটট্রিক বাউন্ডারি। আগের ইনিংসের সফলতম বোলার নাইম হাসানের বলেও চার-ছক্কা মেরে দলকে দারুণ শুরু এনে দেন কুশল।
রানের গতি থামানোর জন্য অবশেষে সাকিব আল হাসানকে আক্রমণে আনেন মুমিনুল হক। নিজের ওভারের তৃতীয় বলেই দারুণ টার্নিং ডেলিভারিতে করুনারাত্নেকে বিপদে ফেলেন দেন সাকিব। তবে অল্পের জন্য বেঁচে যান লঙ্কান অধিনায়ক। প্রথম ঘণ্টায় ৬৭ রান তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা।
পানি পানের বিরতির পরের ওভারেই কুশলকে ফেরান তাইজুল। তার মিডল স্ট্যাম্পে পড়া ডেলিভারি সূক্ষ্ম টার্নে পরাস্ত করে কুশলের ব্যাট, বল গিয়ে আঘাত হানে অফস্ট্যাম্পে। সাজঘরে ফেরার আগে ৮ চার ও ১ ছয়ের মারে মাত্র ৪৩ বলে ৪৮ রান করেন এ মিডল অর্ডার ব্যাটার।
এরপর প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজকে এবার রানের খাতাই খুলতে দেননি তাইজুল। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে শুরু করা ম্যাথিউজ ১৫ বল খেলেও রান করতে পারেননি। তাইজুলের ফুল লেন্থের বলে সজোরে ড্রাইভ করতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন তিনি। দুর্দান্ত ক্যাচে তাইজুল নিজের তৃতীয় উইকেটটি নেন।
সেশনের বাকি সময়ে আর বিপদ ঘটতে দেননি অধিনায়ক করুনারাত্নে ও অলরাউন্ডার ধনঞ্জয় ডি সিলভা। তবে দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই তাইজুলের চতুর্থ শিকারে পরিণত হন লঙ্কান অধিনায়ক। আক্রমণাত্মক শট খেলতে গিয়ে মুমিনুল হকের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন ১৩৮ বলে ৫২ রান করা করুনারাত্নে।
এরপর প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ৭৫ নম্বর জার্সি পরিহিত ধনঞ্জয়কে সাজঘরে পাঠান সাকিব। হাফ ট্র্যাকার ডেলিভারি পুল করে সোজা শর্ট মিড উইকেটে দাঁড়ানো মুশফিকুর রহিমের হাতে তুলে দেন ধনঞ্জয়। তার ব্যাট থেকে আসে ৬০ বলে ৩৩ রান।
ঠিক পরের বলে ফিরতে পারতেন ডিকভেলাও। লেগস্ট্যাম্পের বাইরের বলে সুইপ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো তাইজুলের হাতে প্রায় ধরা পড়ে গিয়েছিলেন ডিকভেলা। অল্পের জন্য তাইজুলের হাতের ওপর দিয়ে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে।
শুরুতেই জীবন পাওয়ার পরেও রয়েসয়ে খেলার কথা ভাবেননি ডিকভেলা। সুযোগ পেলেই হাত খুলে রানের পথে হেঁটেছেন লঙ্কান উইকেটরক্ষক ব্যাটার। অন্যদিকে চান্দিমাল ছিলেন অবিচল। একের পর এক ডিফেন্ড করে গেছেন তিনি। দ্বিতীয় সেশন শেষে চান্দিমাল ৭৮ বলে ১৪ ও ডিকভেলা ৪৭ বলে ১৪ রানে অপরাজিত।