এতে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু, পরিচালক মোহাম্মদ আদনান ইমাম, এএম সাইদুর রহমান, মোহাম্মদ অলিউর রহমান, আবু বকর চৌধুরী, লকিয়ত ঊল্লাহ, মোহাম্মদ নাজিম, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক এয়ার চিফ মার্শাল (অব) আবু এশরার, ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, রাদ মজিব লালন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী গোলাম আউলিয়া, এএমডি কাজী মো. তালহা, ডিএমডি ও সিএফও হারুনুর রশীদ এবং কোম্পানি সচিব মো. রিয়াজ উদ্দিন আসিফ প্রমুখ।
এজিএমে ২০২১ সালের জন্য ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন করেন শেয়ারহোল্ডাররা। এরমধ্যে নগদ লভ্যাংশ সাড়ে ৭ শতাংশ এবং স্টক ডিভিডেন্ট সাড়ে ৭ শতাংশ। সভা গত বছরে নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং ডাইরেক্টরস রিপোর্টসহ সব এজেন্ডা উপস্থাপন ও অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ব্যাংকের আমানত ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে ২৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৮২ কোটি টাকা। আগের বছর যা ছিল ৯ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। ঋণের পরিমান ৭ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪০ শতাংশ। বছর শেষে পরিচালন মুনাফা ৪০৫ কোটি এবং নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২০৮ কোটি টাকা। মুনাফা বেড়েছে ৩২ শতাংশেরও বেশি। শেয়ার প্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৮৩ পয়সা। মূলধন সংরক্ষণের হার ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশে উন্নীত করে আর্থিক শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে ব্যাংকটি।
এছাড়া গত বছরে ব্যাংকটির মাধ্যমে আমদানি হয়েছে ৪ হাজার ২৩৭ কোটি টাকার, রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৬৫ কোটি টাকার ও রেমিটেন্স এসেছে ১ হাজার ৮২ কোটি টাকা। ব্যাংকটি তার কার্যক্রম গ্রাম-বাংলায় ছড়িয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করেছে। এতে একদিকে সেবার প্রসার যেমন ঘটেছে তেমনি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত হয়েছে। নিজেদের এসব কর্মকান্ডের স্বীকৃতি স্বরুপ ‘সাউথ এশিয়ান বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘আরটিভি কৃষি পদক’ অর্জন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক।
এজিএমে পরিচালক, শেয়ারহোল্ডার, গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক গ্রাম-বাংলার মানুষের জন্য কাজ করছে। প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে উপশাখা ও পার্টনারশিপ ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্বল্প সুদে বিনাজামানতে ঋণ বিতরণ করছে। ক্ষুদ্রঋণ চালু করে ইতোমধ্যে ২৬ হাজার মানুষের মাঝে ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ বিতরণ করছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বাস্তবায়ণে কাজ করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাননীয় প্রধামন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করছে এনআরবিসি ব্যাংক। সরকারের সেবামূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার আমরা সরকারি ভূমি রেজিস্ট্রশন অফিস, বিআরটিএ, পল্লী বিদ্যুৎ, যুবউন্নয়ন অধিদপ্তরসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এসকেএসের মত এনজিও এবং গ্রামীণফোনের সঙ্গে কাজ করছি। বৈশ্বিকদাতা সংস্থা অক্সফামের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছি আমরা। এনআরবিসি ব্যাংক মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার করে সুশাসন ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে সেই লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছি।
ব্যাংকের এমডি গোলাম আউলিয়া বলেন, প্রবাসী উদ্যোক্তাদের স্বপ্পের এনআরবিসি ব্যাংক আজ গ্রাম-বাংলার মানুষের ব্যাংক। দেশের উন্নয়ন ও সরকারি কাজের সঙ্গে অংশীদারিত্বের একটি ব্যাংক। অর্থায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ৫৩ জন স্বপ্নবাজ প্রবাসী উদ্যোক্তার হাত যাত্রা শুরু করে এনআরবিসি ব্যাংক। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ২০২১ সালে পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয় ব্যাংকটি। এছাড়া প্রান্তিক মানুষের দোর গোড়ায় সেবা পৌছাতে উপশাখা ব্যাংকিংয়ের ধারণার প্রবর্তক এনআরবিসি ব্যাংক। বর্তমানে গ্রাহক সেবায় সারাদেশে ব্যাংকটির ৯৩টি শাখা ও ৮৫৭টি উপশাখা রয়েছে। এছাড়া রয়েছে বিআরটিএ কালেকশন বুথ, পল্লী বিদ্যুতের বিল কালেকশন বুথ, ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিসে বুথ ও ডিপিডিসি ও ডেসকোতে বিল কালেকশন বুথ। সারাদেশে ৫৯৬টি এজেন্ট পয়েন্ট রয়েছে ব্যাংকটির।